চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সৌদি আরবের মদিনা থেকে আসা বাংলাদেশ বিমানের একটি উড়োজাহাজ রানওয়েতে আটকা পড়েছে। এ ঘটনায় বিমানবন্দরের কার্যক্রমে কিছুটা বিঘ্ন ঘটেছে। উড়োজাহাজটিতে প্রায় ৪০০ হজযাত্রী ও প্রবাসী যাত্রী ছিলেন।
আজ (৫ জুলাই) বেলা ১১টার দিকে শাহ আমানত বিমানবন্দরের রানওয়ে-২৩ প্রান্তে এই ঘটনা ঘটে। উড়োজাহাজটি মদিনা থেকে গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টায় উড্ডয়ন করে এবং চট্টগ্রামে অবতরণ করে সকাল সোয়া ৯টায়। তবে অবতরণের পর ইউটার্ন নেওয়ার সময় এটি রানওয়ের মাঝপথে আটকে যায়। উড়োজাহাজের যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে এই অবস্থান ঘটে এবং প্রায় দুই ঘণ্টা যাত্রীদের অনিশ্চিত অবস্থায় আটকা পড়ে থাকতে হয়।
এ বিষয়ে একটি সাক্ষাৎকারে, চট্টগ্রামের দোস মোহাম্মদ নামের এক যাত্রী বলেন, “আমরা সব কিছু ঠিকঠাক মনে করছিলাম, কিন্তু অবতরণের পর ইউটার্ন নেওয়ার সময় উড়োজাহাজটি মাঝপথে আটকে যায়। তখন প্রচণ্ড বৃষ্টি হচ্ছিল, এবং আমরা প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে বসে আছি।”
পরে শাহ আমানত বিমানবন্দরের মুখপাত্র এবং প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইব্রাহীম খলিল বলেন, “মদিনা থেকে আসা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফ্লাইট বিজি-১৩৮ অবতরণের পর রানওয়ে-২৩ প্রান্তে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে আটকে পড়ে। তবে দ্রুতই উড়োজাহাজটি থেকে সমস্যাটি সমাধান করে রানওয়ে থেকে সরিয়ে ফেলার প্রক্রিয়া চলছে।”
তিনি আরও জানান, বিমান চলাচলের ক্ষেত্রে কোন ধরনের বড় সমস্যা হয়নি, তবে কিছুটা বিলম্ব ঘটে। শাহ আমানত বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ সব ধরনের কার্যক্রম সচল রাখতে যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছে।
এই ঘটনা নিয়ে একাধিক যাত্রী জানান, তাঁরা প্রথমে ভেবেছিলেন এটি সাধারণ একটি ত্রুটি হবে, কিন্তু সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে তাদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়। তারা আশঙ্কা করছিলেন, উড়োজাহাজের অবস্থান আরও দীর্ঘ সময় ধরে থাকবে এবং এতে তাদের যাওয়ার পরিকল্পনায় বিঘ্ন ঘটবে। যাত্রীদের বেশ কিছুটি জানান, এমন পরিস্থিতিতে তারা সেবা পাওয়ার জন্য বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে সহযোগিতা চেয়েছিলেন।
যাত্রীদের মধ্যে একজন, মোহাম্মদ সেলিম, বলেন, “আমরা অনেকটা সময় ধরে সেখানে আটকা পড়ে ছিলাম, এবং সবাই খুবই উৎকণ্ঠিত ছিলেন। এমন অবস্থায় যাত্রীদের জন্য প্রয়োজনীয় সেবা প্রয়োজন ছিল।”
উল্লেখ্য, এই উড়োজাহাজটি পবিত্র হজ পালন শেষে মদিনা থেকে চট্টগ্রামে ফিরছিল। অনেক যাত্রী প্রবাসী ছিলেন এবং তারা দেশে ফিরে যাওয়ার জন্য উড়োজাহাজে ছিলেন। তাদের মধ্যে অনেকেই বিদেশে দীর্ঘদিন ধরে ছিলেন এবং অবশেষে দেশে ফিরছিলেন। এই ধরনের অপ্রত্যাশিত ঘটনা যাত্রীদের জন্য একটি কঠিন পরিস্থিতি তৈরি করে।
শাহ আমানত বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ এবং বাংলাদেশ বিমানের পক্ষ থেকে দ্রুত সময়ের মধ্যে পরিস্থিতি সমাধান করতে প্রক্রিয়া চলছে এবং বিমান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানানো হয়েছে। যাত্রীদের সুবিধার্থে পুরো প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
এছাড়া, উড়োজাহাজের যান্ত্রিক ত্রুটির ব্যাপারে আরো বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করা হচ্ছে, এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই ঘটনা সম্পর্কে আরও খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে এবং যাত্রীদের নিরাপত্তা ও আরাম নিশ্চিত করার জন্য দ্রুততম সময়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
চট্টগ্রামের শাহ আমানত বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এই ঘটনায় আতঙ্কিত যাত্রীদের সঠিক সেবা প্রদান করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ রয়েছেন।
Leave a comment