Home আন্তর্জাতিক ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশ নেওয়া বাংলাদেশের এক তরুণের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
আন্তর্জাতিকজাতীয়

ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশ নেওয়া বাংলাদেশের এক তরুণের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

Share
Share

ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রুশ বাহিনীর হয়ে, যুদ্ধে অংশ নেওয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার এক তরুণের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।  তার এক সহযোদ্ধা মুঠোফোনে পরিবারকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

সহযোদ্ধার বরাত দিয়ে ওই যুবকের পরিবার জানিয়েছে, যে স্থানে সে নিহত হয়েছে, সেখানে যাওয়া সম্ভব নয়।

জানা যায়, হোসেনপুর গ্রামের মো. মোরশেদ মিয়ার ছেলে মো. আকরাম হোসেন  রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধে অংশ নিয়ে ইউক্রেনের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নিহত হন।

আকরামের এক সহযোদ্ধার ফোনে এ খবর জানার পর গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে নিহতের স্বজনদের মাঝে চলছে মাতম। তারা নিহতের লাশ ফেরত, আর্থিক ক্ষতিপূরণ ও জড়িতদের সুষ্ঠু বিচার চেয়েছেন। তাদের দাবি, আর কোনো বাবা-মার বুক যেন এভাবে কেউ খালি করতে না পারে, সে পদক্ষেপ নিতে হবে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার মো. আকরাম হোসেন কীভাবে রাশিয়ায় গিয়েছিলেন সে বিষয়ে বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, পরিবারের খরচে নরসিংদীর একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে ওয়েল্ডারের কাজ শেখেনআকরাম। পরে স্বজনের কাছ থেকে ঋণ করে প্রায় ৯ মাস আগে আকরামকে রাশিয়া পাঠান তার বাবা মোরশেদ মিয়া।

মোরশেদ মিয়া বলেন, ‘আমি গরিব মানুষ, কৃষি কাজ করি। ছেলেকে ভালো ওয়েল্ডিংয়ের কাজ শিখিয়ে বিদেশ পাঠাইতে চাইছি, শিখছেও। পরে চায়না কোম্পানিতে জয়েন করার কথা। রাশিয়ায় যাওয়ার পর চায়না কোম্পানিতে চার মাস আমার পুতে কাজ করছে। সেখানে ওয়েল্ডার হিসেবে গেছে। কিন্তু ওয়েল্ডার হিসেবে না দিয়া তাকে হেলপার হিসাবে ছয়শো টাকা বেতনে কাজ দেওয়া হয়েছে।’

পরিবারের দাবি, যে চার মাস রাশিয়ায় চীনা একটি কোম্পানিতে কাজ করতেন আকরাম, সেখান থেকে নিয়মিত বেতনভাতা দেওয়া হতো না। খাওয়া নিয়েও ছিল সংকট।

নিহত আকরামের বাবা জানান, মূলত ওয়েল্ডার হিসেবে যাওয়ার পর সহযোগী হিসেবে কাজ করতে দেওয়া এবং বেতন কম দেওয়ার কারণে ওই চাকরিতে অনীহা তৈরি হয় তার। তিনি বলেন, ‘ঠান্ডা ও বরফের মধ্যে কাজ করতে দেওয়া হতো। ঠিকমতো বেতন দিতো না, ভাত দিতো না, রাশিয়ান খাবার দিতো।’

রাশিয়ায় চীনা কোম্পানিতে কাজ করার পর সেখানকার একটি গ্রুপের সঙ্গে আকরামের পরিচয় হয় বলে তার বাবা জানান। তিনি বলেন, ‘ওই গ্রুপের একজন লোক আকরামসহ সাতজন বাঙালি ছেলেকে রাশিয়ার মস্কো নিয়ে যায়। সেখানকার সেনাবাহিনীর মাধ্যমে কিছুদিন ট্রেনিংও দেওয়া হয়। পরে সেখান থেকে তাদেরকে ইউক্রেন নিয়ে যাওয়া হয় যুদ্ধের জন্য ।’

আকরামের বাবা আরও বলেন, ‘আমি যখন জানতে পারলাম, ছেলেরে জিগাইলাম কেমনে কী গেলি ইউক্রেন? তখন ছেলে আমারে জানাইলো আমারে এদেশের নাগরিকত্ব দিবে এবং রাশিয়া সরকার দুই বিলিয়ন টাকাও দিবে । আমার ছেলেডারে লোভ-লালসা দেখাইয়া ইউক্রেনের যুদ্ধে নিয়া গেছে দালাল চক্র।’

গত দুই মাসে বেশ কিছুদিন পরপর অল্প সময়ের জন্য আকরাম  পরিবারের সঙ্গে ফোনে কথা বলতেন । তখন তিনি সেখানকার ভীতিকর পরিবেশে থাকা ও যুদ্ধের সেই অভিজ্ঞতার কথাও পরিবারকে জানাতেন । এ সময় যুদ্ধের পোশাক পরা নিজের কিছু ছবিও পরিবারের কাছে পাঠান তিনি।

Share

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Don't Miss

পুতিনের সঙ্গে আলোচনায় বসতে রাজি হয়েছেন জেলেনস্কি।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আহ্বানের পর,  ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি  আগামী বৃহস্পতিবার (১৫ মে) রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে তুরস্কে সাক্ষাৎ করতে প্রস্তুত...

আজ শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গণহত্যার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।

জুলাই আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত গণহত্যার ঘটনায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন আজ সোমবার দাখিল করবে তদন্ত...

Related Articles

মিয়ানমারে স্কুলে জান্তা হামলা, শিশুসহ নিহত হয়েছে ২২ জন

সামরিক জান্তা বাহিনীর বিমান হামলায় মিয়ানমারের একটি স্কুলে ২০ জন শিশু ও...

জাতিসংঘের সতর্কবার্তা, দুর্ভিক্ষের চূড়ান্ত সীমায় গাজা

ক্রমেই তীব্রতর হচ্ছে গাজা উপত্যকায় দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা । জাতিসংঘ-সমর্থিত এক প্রতিবেদনে জানানো...

কন্যা সন্তানকে কেন কুপিয়ে মারল বাবা-মা?

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলায়  এক দম্পতির বিরুদ্ধে, জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে...

‘মেয়েরা যেন আমার মরা মুখ না দেখে’, চিরকুট লিখে বাবার আত্মহত্যা।

ফরিদপুর উপজেলার কৈজুরি গ্রামে নুরুজ্জামান বুলবুল (৪৮) নামে এক ঠিকাদারের ঝুলন্ত লাশ...