আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু হয়েছে। প্রথম দিন বাংলা প্রথম পত্র পরীক্ষা। ৩০ হাজার ৪৫টি স্কুল ও মাদ্রাসার ১৯ লাখ ২৮ হাজার ৯৭০ ছাত্রছাত্রী পরীক্ষায় বসবে ১১ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে । এ বছর দেশের ৩ হাজার ৭১৫ কেন্দ্রে পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। পরীক্ষা চলবে ১৩ মে পর্যন্ত।
সাধারণ ৯ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এবার পরীক্ষার্থী ১৪ লাখ ৯০ হাজার ৯৩১ জন। এর মধ্যে ৭ লাখ ১ হাজার ৯৫৩ জন ছাত্র এবং ৭ লাখ ৮৮ হাজার ৯৭৮ ছাত্রী। আর মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে পরীক্ষার্থী এ বছর ২ লাখ ৯৪ হাজার ৭২৬ জন। এর মধ্যে ১ লাখ ৫০ হাজার ৮৯৩ জন ছাত্র এবং ১ লাখ ৪৩ হাজার ৮৩৩ ছাত্রী। কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে পরীক্ষার্থী রয়েছে ১ লাখ ৪৩ হাজার ৩১৩ জন। এর মধ্যে ছাত্র ১ লাখ ৮ হাজার ৩৮৫ এবং ৩৪ হাজার ৯২৮ জন ছাত্রী।
গত বছরের চেয়ে এবার পরীক্ষার্থী কমেছে প্রায় ১ লাখ পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে। সংখ্যায় তা ৯৫ হাজার ২২২ জন। শুধু তাই নয়, বিগত পাঁচ বছরে এবারই সবচেয়ে কম শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। জানা গেছে, ২০২৪ সালে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল ২০ লাখ ২৪ হাজার ১৯২ জন। ২০২৩ সালে ২০ লাখ ৭২ হাজার ১৬৩ জন, ২০২২ সালে ১৯ লাখ ৯৪ হাজার ১৩৭ এবং ২০২১ সালে ২২ লাখ ৪০ হাজার ৩৯৫ শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল।
এ বছর পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কমে যাওয়ার বিষয়ে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কম-বেশি হওয়ার বিষয়টি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। কোনো বছরই রেজিস্ট্রেশন করা সব শিক্ষার্থী পরীক্ষায় বসে না। এটাকে ঝরে পড়াও বলা যায় না। সাধারণত কমপক্ষে তিন বছরের মধ্যে শিক্ষাজীবনে ফিরে না এলে তাকে ঝরে পড়া বলে। দারিদ্র্যের কারণে অনেকে এক বছর পরীক্ষা দিতে না পারলে পরের বছর অংশ নেয়।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানদের কেউ কেউ মনে করেন, এখনও শিক্ষার্থী ঝরে পড়া বন্ধ হয়নি। উপবৃত্তি চালু করায় একসময় শিক্ষার্থী বেড়ে ছিল। উপবৃত্তির পরিমাণটা এখন এমন যে, তা দিয়ে আর অভিভাবক-শিক্ষার্থীকে স্কুলমুখী করা যাচ্ছে না। আর করোনার পর থেকে অনেক শিক্ষার্থী সাধারণ ধারার পড়াশোনা ছেড়েছে। একই সঙ্গে ইবতেদায়ি তথা আলিয়া ধারার মাদ্রাসায় শিক্ষার্থী কম ভর্তি হচ্ছে। অনেকে হাফেজি পড়ছে, কওমি ঘরানার মাদ্রাসায় ভর্তি হচ্ছে। ফলে সাধারণ ধারার পড়ালেখায় শিক্ষার্থী কমছে।
ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাজেদা বেগম বলেন, পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কম বা বেশি বছরভেদে হতেই পারে, এটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া।
এবার প্রশ্ন ফাঁসমুক্ত পরিবেশে পরীক্ষা নেওয়ার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া গ্রীষ্মকাল হওয়ায় পরীক্ষা কেন্দ্রগুলোতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে বিদ্যুৎ বিভাগকে চিঠি দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ। আন্তঃশিক্ষা বোর্ড পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কমিটির আহ্বায়ক এবং ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক এস এম কামাল উদ্দিন হায়দার বলেন, ‘পরীক্ষা কেন্দ্রের আশপাশে ২০০ গজের মধ্যে শুধু পরীক্ষার তিন ঘণ্টা ১৪৪ ধারা জারি থাকবে। তবে কেন্দ্রভেদে এ দূরত্ব কমবেশি হতে পারে।’
ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) ঢাকা মহানগরী এলাকায় এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রের ২০০ গজের মধ্যে পরীক্ষার্থী এবং পরীক্ষা-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ছাড়া জনসাধারণের প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে ।’
গতকাল ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলীর সই করা এক গণবিজ্ঞপ্তিতে এ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
Leave a comment