ফিলিস্তিনের কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান ব্যুরো জানিয়েছে, দখলদার ইসরাইলের নৃশংস আগ্রাসনে অবরুদ্ধ গাজায় ব্যাপকসংখ্যক শিশু এতিম হয়েছে । মাত্র ৫৩৪ দিনেই অনাথ শিশুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৯ হাজার ৩৮৪ জনে। আধুনিক ইতিহাসের সবচেয়ে বড় এতিমখানায় পরিণত হয়েছে গাজা।
বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে বার্তা সংস্থা আলজাজিরা জানিয়েছে, ৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ৫৩৪ দিন পর্যন্ত ইসরাইলি হামলায় গাজায় ৩৯ হাজার ৩৮৪ শিশু তাদের বাবা অথবা মা কিংবা বাবা-মা দুজনকেই হারিয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ১৭ হাজার শিশু বাবা ও মা উভয়কেই হারিয়েছে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘এই শিশুরা অত্যন্ত দুঃখজনক অবস্থায় বসবাস করছে। অনেকেই ছেঁড়া তাঁবুতে বা ধ্বংস হওয়া ঘরে আশ্রয় নিতে বাধ্য হচ্ছে। সেখানে সামাজিক সেবা ও মানসিক সহায়তার কোনো উপস্থিতি নেই বললেই চলে।
৬০ হাজার শিশু মারাত্মক পুষ্টিহীনতা এবং অনাহারের ঝুঁকিতে রয়েছে যা তাদের মৃত্যুর কারণ হতে পারে বলেও সতর্ক করেছে সংস্থাটি। ফিলিস্তিনিদের জন্য জাতিসংঘের ত্রাণ ও কর্ম সংস্থা (ইউএনআরডাব্লিউএ) শনিবার জানিয়েছে, ১৮ মার্চ ইসরাইল যুদ্ধবিরতির প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করার পর থেকে গাজায় প্রতিদিন কমপক্ষে ১০০ শিশু নিহত বা আহত হচ্ছে।
আধুনিক ইতিহাসের সবচেয়ে বড় এতিমখানা এখন গাজা। যার ফলে নতুন সংকটের মুখোমুখি হয়েছে উপত্যকাটি।’ বিবৃতি অনুযায়ী, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে গাজায় ইসরাইলি আক্রমণে অন্তত ১৭ হাজার ৯৫৪ শিশু নিহত হয়েছে। যার মধ্যে ২৭৪ জন নবজাতক এবং ৮৭৬ জন এক বছরের কম বয়সী শিশুও রয়েছে। সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, ‘১৭ জন শিশু বাস্তুচ্যুতদের আশ্রয় নেওয়া তাঁবুতে তুষারে জমে মারা গেছে। এছাড়া ৫২ জন শিশু ক্ষুধা ও পুষ্টিহীনতায় মারা গেছে।’
চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি ইসরাইলের সঙ্গে সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের যুদ্ধবিরতি হয়। কিন্তু দখলদাররা চুক্তির প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে নতুন করে হামলা শুরু করে গাজায়। এ ছাড়া গাজায় প্রয়োজনীয় মানবিক সাহায্য প্রবেশ করতেও বাধা দেয় তারা। নতুন করে চালানো হামলায় এখন পর্যন্ত প্রায় ১ হাজার ১৬০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে।
শনিবারেও ইসরাইলি বাহিনী হামলা অব্যাহত রেখেছে । এ দিন ভোর থেকে গাজাজুড়ে হামলা চালায় তারা। এতে কমপক্ষে ২১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যাদের মধ্যে বেইত হানুনে বিমান হামলায় ৬ জন নিহত হয়েছেন। এসব হামলার ফলে গাজায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০ হাজার ৬৬৯ জনে। এ ছাড়া আরও ১ লাখ ১৫ হাজার ২২৫ জন আহত হয়েছেন।
Leave a comment