Home Uncategorized চিত্রনায়িকা পরিমনির বিরুদ্ধে গৃহকর্মীকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে!
Uncategorized

চিত্রনায়িকা পরিমনির বিরুদ্ধে গৃহকর্মীকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে!

Share
Share

ঢাকাই সিনেমার আলোচিত নায়িকা পরীমণির বিরুদ্ধে সন্তানকে খাবার খাওয়ানোকে কেন্দ্র করে গৃহকর্মীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে ।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পিংকি আক্তার গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকার ভাটারা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। ভাটারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। অভিযোগের কথা তুলে ধরে গৃহকর্মী পিংকি আক্তার জানান, এক মাস আগে কাদের নামের এক ব্যক্তির মাধ্যমে চিত্রনায়িকা পরীমনির বাসায় কাজে যোগ দেন তিনি। তাঁর দায়িত্ব ছিল পরীমনির এক বছর বয়সী মেয়ের দেখাশোনা করা এবং তাকে খাবার খাওয়ানো। পরীমনির বাচ্চাকে দুই ঘণ্টা পরপর খাওয়ানোর নিয়ম। তিনি সেটা মেনে প্রতিদিন বাচ্চাকে দুই ঘণ্টা পরপর খাবার খাওয়াতেন। তবে তাঁকে বাচ্চার দেখাশোনার জন্য নিয়ে যাওয়া হলেও, বাসার অন্য কাজও করানো হতো।

গণমাধ্যমে পিংকি দাবি করেছেন, ২ এপ্রিল তিনি পরীমনির বাসায় তাঁর বাচ্চাটিকে বসিয়ে বাজারের লিস্ট করছিলেন। এ সময় বাচ্চাটি কান্না শুরু করে। এর মধ্যে কান্না শুনে সৌরভ নামের এক ব্যক্তি, যিনি পরীমনির পরিচিত এবং মাঝেমধ্যেই তাঁর বাসায় আসেন, তাঁকে বলেন, ‘বাচ্চাটাকে একটু সলিড খাবার দাও।’ তখন তিনি সৌরভকে বলেন, বাচ্চাটা কিছুক্ষণ আগে সলিড খাবার খেয়েছে; দুই ঘণ্টা হয়নি এখনো। কাজ শেষ করে তারপর তাকে দুধ খাওয়াবেন।

পিংকি গণমাধ্যমে বলেন, ‘আমি এখানে এসে জেনেছি, আমার আগে যে গৃহকর্মী ছিলেন, তিনিও বাচ্চা কান্না করলে মাঝেমধ্যে দুধ দিতেন। এই কথা বলে আমি বাচ্চাটার জন্য দুধ রেডি করছিলাম। এরই মধ্যে পরীমনি মেকআপ রুম থেকে বের হয়ে আমাকে তুই-তোকারি করে অকথ্য ভাষায় গালাগাল শুরু করেন—আমি কেন বাচ্চার জন্য দুধ নিয়েছি। আমি তখন তাঁকে বললাম, যেহেতু সলিড খাবার দেওয়ার সময় এখনো হয়নি, তাই আমি দুধ নিয়েছি। তখন পরীমনি গালি দিয়ে বলেন, “বাচ্চাটা কি তোর না আমার?” এরপরই তিনি আমাকে থাপ্পড় দিতে থাকেন এবং মাথায় জোরে জোরে আঘাত করতে থাকেন। মারধরের পর আমি জোরে জোরে কান্না করতে থাকি এবং তাঁকে বলি, আমি আর পারছি না, আমাকে হাসপাতালে নিয়ে যান। তখন তিনি আমাকে অকথ্য ভাষায় গালি দিয়ে বলেন, “তুই এখান থেকে কোথাও যেতে পারবি না।

তোকে এখানেই মারব এবং এখানেই চিকিৎসা করব।” এই কথা বলে তিনি আবার আমাকে মারতে আসেন। তখন সৌরভ তাঁকে বাধা দেন। সৌরভ কেন বাধা দিলেন, এই কারণে পরীমনি তাঁকেও গালাগাল করেন।

একপর্যায়ে আমি অজ্ঞান হয়ে মাটিতে পড়ে যাই। প্রায় এক ঘণ্টা পর আমার জ্ঞান ফেরে। তখন বাসার আরেকজন গৃহকর্মী বৃষ্টিকে আমি বলি, আমাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেন। তখন বৃষ্টি আমাকে বলেন, “পরীমনি ঘুমিয়েছেন, তাঁকে এখন ডিস্টার্ব করা যাবে না।” তখন আমি বাথরুমে গিয়ে লুকিয়ে কাদের ভাইকে ফোন দিই, তাঁকে পুরো ঘটনা জানাই এবং সাহায্য চাই—তিনি যেন আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু তিনিও আমাকে বলেন, “পরীমনি এখন যদি ঘুমিয়ে থাকেন, তাহলে তাঁকে ডিস্টার্ব করা যাবে না।” আর কোনো উপায় না দেখে আমি বাধ্য হয়ে জাতীয় জরুরি সেবার নম্বর ৯৯৯-এ ফোন করি এবং পুলিশকে জানাই।

অভিযোগের বিষয়ে পরীমণি গণমাধ্যমকে জানান, একটি এজেন্সি মারফত মেয়েটিকে পেয়েছেন তিনি। ওই এজেন্সির অনুরোধে তাকে বাড়িতে ঢুকতে দিয়েছিলেন। কিন্তু কয়েকদিন পরই তার ওপর সন্দেহ তৈরি হয়। কারণ মেয়েটি বেশিরভাগ সময় ফোনে ব্যস্ত থাকে। কোথায় যেন ছবি ও ভিডিও পাঠায়।

পরীমণির ভাষ্য, ‘মেয়েটা চাকরির জন্য এসেছিল। খুব কান্নাকাটি করলো। বলল বের করে দিয়েন না, যে কোনো কাজ করে দেব, আমার কেউ নেই, বাচ্চা নিয়ে না খেয়ে আছি। অন্তত একটা মাস থাকি। আমার দয়া হলো। কিন্তু সে ছিল প্রতিবন্ধী। কাজ করার সক্ষমতা ওর ছিল না। তবু আমি তাকে বললাম, কাজ করতে হবে না, আমার বাচ্চাদের সঙ্গে খেলবে।’

পরীমণির কথায়, ‘ওর কর্মকাণ্ডে আমার সন্দেহ হলো। দুইদিন পর পর এ সমস্যা, সে সমস্যা, শুধু টাকা চায়। ভেবেছিলাম, এসেছে যখন একমাস থাকুক। পরে যার মাধ্যমে এসেছে, তাদের জানালাম। ওকে যখনই বিদায় হতে বললাম, কান্নাকাটি শুরু করলো। পরে ১ মাসের বেতন ২০ হাজার টাকা, ঈদের বোনাস, সালামি, নতুন কাপড় দিয়ে বিদায় হতে বললাম। ভারি কিছু তুলতে পারে না, আমার ছেলেকে কোলে নিতে পারে না। এক মাসও হয়নি, ব্ল্যাকমেল শুরু করেছে।’

নির্যাতনের অভিযোগ প্রসঙ্গে পরীমণি বলেন, ‘আমার সংসার চলে গৃহকর্মীদের ওপরে। তাদের সঙ্গেই আমার সবকিছু। আমি তাদের ‘আপনি’, ‘আন্টি’ ছাড়া কথা বলি না। এত বছর ঢাকা শহরে থাকি, আমার গৃহকর্মী, গাড়িচালক কাউকে বদলাতে হয়নি। কারও পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ ওঠেনি। চার-পাঁচ দিনের জন্য একজন এসে অভিযোগ করা তো সন্দেহজনক। নিশ্চয়ই ওর পেছনে কেউ আছে। কারা ওকে আমার বাসায় পাঠিয়েছে সেটা খুঁজে বের করতে হবে। কার কার সঙ্গে ফোনে কথা বলতো, কাকে কাকে ছবি পাঠাতো এসব তদন্ত করলেই সব বেরিয়ে যাবে।’

অভিযোগটি তদন্ত করছেন ভাটারা থানার এসআই আরিফুল ইসলাম। পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, লিখিত অভিযোগ আমরা পেয়েছি, তবে এখনও সেটি নথিভুক্ত করা হয়নি। প্রাথমিক তদন্তের পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে যে এটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) নাকি মামলা হিসেবে নেওয়া হবে।

Share

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Don't Miss

কার্টনে পাওয়া মরদেহের টুকরোগুলো সাভারের সবুজ মোল্লার

মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ে একটি স্কুলের পাশে এবং ঢাকার কেরানীগঞ্জ মডেল থানার মালঞ্চ এলাকায় কার্টনের মধ্যে পলিথিনে মোড়ানো অজ্ঞাত ব্যক্তির মরদেহের পরিচয় পাওয়া গেছে। নিহত...

ঈদের ছুটি শেষে ঢাকায় ফিরছে কর্মজীবী মানুষ

ঈদের ছুটি শেষে ঢাকায় ফিরতে শুরু করেছে কর্মজীবী মানুষ। দুদিন আগে থেকেই কর্মে ফিরতে শুরু করেছে অনেকেই।  আজ শনিবার ছুটির শেষ দিন আগামীকাল...

Related Articles

৬ লাখ পাউন্ডের ফ্ল্যাট নিয়ে প্রশ্নের মুখোমুখি টিউলিপ

আবারও টিউলিপ সিদ্দিককে নিয়ে সরগরম বৃটিশ মিডিয়া। ডেইলি মেইল এবার  তাকে নিয়ে...

৯ দিনের ছুটি শেষে আজ খুলছে অফিস-আদালত 

টানা ৯ দিনের লম্বা ছুটি শেষে আজ থেকে খুলছে সব সরকারি, আধা...

গোপন নথিতে প্রিন্স অ্যান্ড্রুর সঙ্গে চীনা ‘গুপ্তচর’-এর ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের চাঞ্চল্যকর তথ্য ফাঁস

ব্রিটিশ রাজপরিবারের সদস্য প্রিন্স অ্যান্ড্রুর বিরুদ্ধে চীনের কথিত এক গুপ্তচরের সঙ্গে গভীর...

সাফ সভাপতির দৌড়ে আবারও সালাহউদ্দিন

  দক্ষিণ এশিয়ান ফুটবল ফেডারেশন (সাফ) সভাপতির পদে আবারও কাজী সালাহউদ্দিনের ফিরে...