Home জাতীয় জাতীয় নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনের প্রস্তুতি
জাতীয়

জাতীয় নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনের প্রস্তুতি

Share
Share

আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পন্ন করার পরিকল্পনা নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। নির্বাচন কমিশন (ইসি) বলছে, সময়মতো নির্বাচন আয়োজন করতে হলে অক্টোবরের মধ্যে তাদের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে হবে। ইতিমধ্যে প্রস্তুতি শুরু করেছে ইসি। কিন্তু জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের জন্য আসলে কী কী প্রস্তুতির প্রয়োজন?
ইসির কর্মকর্তাদের মতে, নির্বাচনের প্রধান প্রস্তুতিগুলোর মধ্যে রয়েছে—ছবিসহ স্বচ্ছ ভোটার তালিকা তৈরি, সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ, ভোটকেন্দ্র স্থাপন, নির্বাচনী উপকরণ কেনাকাটা, নির্বাচনী কর্মকর্তাদের নিয়োগ ও প্রশিক্ষণ, নতুন রাজনৈতিক দল ও দেশি পর্যবেক্ষক সংস্থার নিবন্ধন দেওয়া ইত্যাদি। এ প্রস্তুতির একটি বড় অংশ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই সম্পন্ন করতে হয়, আর কিছু কাজ তফসিল ঘোষণার পর করা হয়।
নির্বাচনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তুতিমূলক কাজ হলো ভোটার তালিকা তৈরি ও সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ। ইসি প্রতিবছর ২ জানুয়ারি থেকে ২ মার্চের মধ্যে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করে। চলতি বছরের হালনাগাদ কার্যক্রম শেষ হবে জুন মাসে, তবে এটি চূড়ান্ত হবে আগামী বছরের ২ মার্চ। এর আগে নির্বাচন হলে নতুন ভোটারদের অন্তর্ভুক্ত করতে আইন সংশোধনের প্রয়োজন হতে পারে।
সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ করাও ইসির অন্যতম দায়িত্ব। আইন অনুযায়ী, কোনো আদমশুমারির পরবর্তী জাতীয় নির্বাচনের আগে কিংবা প্রয়োজন মনে করলে ইসি সীমানা পুনর্নির্ধারণ করতে পারে। সাধারণত এটি একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া, যেখানে খসড়া প্রকাশের পর শুনানি ও আপত্তি নিষ্পত্তির মাধ্যমে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
ভোটকেন্দ্র স্থাপনও গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ। সাধারণত বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে ভোটকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়। ভোটের অন্তত ২৫ দিন আগে চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করতে হয়। এছাড়া নির্বাচনের জন্য স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স, ব্যালট পেপার, সিল, অমোচনীয় কালি, কাগজপত্র, খাম, কলম, মোমবাতিসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী কেনার জন্য দীর্ঘ পরিকল্পনা নিতে হয়।
নির্বাচন পরিচালনার জন্য রিটার্নিং কর্মকর্তা, সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা, প্রিসাইডিং ও পোলিং কর্মকর্তাদের নিয়োগ দিতে হয়। সাধারণত জেলা প্রশাসকরা রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পান, আর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করেন। এসব কর্মকর্তাদের নিয়োগের পর প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ, র‍্যাব, বিজিবি, আনসারসহ বিভিন্ন বাহিনী নিয়োজিত থাকে, আর সেনাবাহিনী থাকে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে। তফসিল ঘোষণার পর এসব বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে নির্দেশনা দেয় ইসি।
নির্বাচনী প্রস্তুতির এসব কাজ অনেকটাই ‘রুটিন ওয়ার্ক’, তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করা ও নির্বাচন কমিশনের ওপর আস্থা বজায় রাখা। এক্ষেত্রে ইসির নিরপেক্ষতা, সরকারের ভূমিকা ও রাজনৈতিক দলগুলোর আচরণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

Share

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Don't Miss

বাগেরহাটে যুবদল নেতাকে কুপিয়ে জখমের অভিযোগ

বাগেরহাট পৌর যুবদলের সাবেক সভাপতি মো. জসিম উদ্দিনকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করার অভিযোগ উঠেছে শ্রমিক দল নেতা আজিম ভূঁইয়া ও তাঁর অনুসারীদের বিরুদ্ধে।...

মিছিল-সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে বাম জোটের ক্ষোভ

রাজধানীতে সভা-সমাবেশ ও মিছিলের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির সিদ্ধান্তের কঠোর সমালোচনা করেছে বাম গণতান্ত্রিক জোট। তাঁরা একে জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণের অপচেষ্টা আখ্যা দিয়ে...

Related Articles

নড়াইলে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষ, নিহত ১, আহত ৮

নড়াইলের কালিয়ায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় একজন...

ধর্ষকদের ফাঁসির দাবিতে মহিলা জামায়াতের মানববন্ধন

ধর্ষণের মামলায় ফাঁসির সাজা নির্ধারণসহ নারী ও শিশু নির্যাতন রোধে পাঁচ দফা...

কাহালুতে খাবার দেওয়ার কথা বলে ২ শিশুকে ধর্ষণ

বগুড়ার কাহালুতে খাবার দেওয়ার কথা বলে ছয় বছর বয়সী দুই শিশুকে ধর্ষণের...

বরিশালে শিশু ধর্ষণের আসামি গণপিটুনিতে নিহত

বরিশালে শিশু ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত এক যুবক গণপিটুনিতে নিহত হয়েছেন। শনিবার (১৫...