সম্প্রতি এক জরিপে উঠে এসেছে, বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে ভারতের তুলনায় চীনের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেন্টার ফর অল্টারনেটিভস পরিচালিত ‘বাংলাদেশে চীনের জাতীয় ভাবমূর্তি’ শীর্ষক জরিপে দেখা গেছে, ৭৫% মানুষ চীনের সঙ্গে সম্পর্ককে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন, যেখানে ভারতের ক্ষেত্রে এই হার মাত্র ১১%। বিপরীতে, ভারতের সঙ্গে সম্পর্ককে নেতিবাচক বলেছেন ৫৮% উত্তরদাতা, যা জরিপে অন্তর্ভুক্ত সাতটি দেশ ও সংস্থার মধ্যে সর্বোচ্চ। ২০২৪ সালের অক্টোবর-নভেম্বরে ৩২টি জেলার ৫,৩৩৫ জনের মধ্যে পরিচালিত এই জরিপের ফলাফল মঙ্গলবার ঢাকায় প্রকাশ করা হয়, যেখানে চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন উপস্থিত ছিলেন। জরিপ অনুসারে, বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে চীনের নাম বলেছেন ২৫% মানুষ, যেখানে ভারত মাত্র ১১% ভোট পেয়েছে। এছাড়া, ৭৫% বাংলাদেশি উচ্চশিক্ষার জন্য চীনে যেতে আগ্রহী, যা ২০২২ সালের তুলনায় ৫% বেশি, এবং ২৯% মানুষ চিকিৎসার জন্য চীনে যেতে চান, যা ২০২২ সালের তুলনায় ১৩% বৃদ্ধি পেয়েছে। চীনের বিনিয়োগ নিয়েও ইতিবাচক মনোভাব লক্ষ্য করা গেছে, কারণ ২০২৪ সালের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর থেকে ১৪টি চীনা কোম্পানি বাংলাদেশে ২৩ কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে। এদিকে, ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কে নেতিবাচক মূল্যায়নের পেছনে পানির ন্যায্য বণ্টন, বাণিজ্য ভারসাম্যহীনতা, সীমান্ত হত্যা এবং রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের অভিযোগের বিষয়গুলো ভূমিকা রেখেছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন। অন্যদিকে, বৃহৎ অবকাঠামো প্রকল্পে চীনের বিনিয়োগ এবং রাজনৈতিক নিরপেক্ষ অবস্থান বজায় রাখার কারণে চীনের প্রতি বাংলাদেশিদের ইতিবাচক মনোভাব বৃদ্ধি পেয়েছে। চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক শক্তিশালী হচ্ছে এবং দুই দেশের জনগণের মধ্যে বন্ধন আরও দৃঢ় হবে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ভবিষ্যতে বাংলাদেশের বৈদেশিক নীতিতে চীনের প্রভাব আরও বাড়তে পারে, আর ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক পুনরুদ্ধারে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা জরুরি হয়ে উঠবে।
Leave a comment