নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে জনজীবনে সৃষ্ট দুর্দশার বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর আরও গভীরভাবে আলোচনা করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তার মতে, রাষ্ট্রীয় কাঠামো ও প্রশাসনিক ব্যবস্থার চেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া উচিত সাধারণ মানুষের সমস্যা কীভাবে সমাধান করা যায়, সে বিষয়ে।
মঙ্গলবার বিকালে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন (এনডিএম) আয়োজিত এক ইফতার অনুষ্ঠানে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
তারেক রহমান বলেন, “নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম নিয়ন্ত্রণ এবং কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি করতে না পারলে দেশের ভবিষ্যৎ বিপন্ন হয়ে যাবে।” তিনি আরও প্রশ্ন তোলেন, রাজনৈতিক দলগুলো কেন এসব বিষয়ে বিতর্ক ও আলোচনায় আসছে না এবং জনগণের সামনে সমাধানের রূপরেখা তুলে ধরছে না।
তিনি বলেন, “আমি কীভাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য মানুষের ক্রয়সীমার মধ্যে রাখব? বাজারব্যবস্থা কীভাবে সাজানো উচিত? উৎপাদন বাড়ানোর কৌশল কী?”—এসব প্রশ্নের জবাব রাজনৈতিক দলগুলোর আগে জনগণের সামনে উপস্থাপন করা দরকার।
তিনি মনে করেন, রাজনৈতিক সংস্কার শুধু সংবিধান বা নির্বাচনী ব্যবস্থার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকা উচিত নয়, বরং মানুষের জীবনমান উন্নয়নের প্রতিটি বিষয়ে সংস্কারের প্রয়োজন রয়েছে।
তারেক রহমান বলেন, “শুধু একজন ব্যক্তি দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না, শুধু তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাই কি সংস্কার? জনগণের সমস্যা সমাধানে সংস্কার কেনো গুরুত্বপূর্ণ হবে না?”
তিনি আরও বলেন, “দেশের ২০ কোটি মানুষের জন্য ন্যূনতম চিকিৎসা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলো কীভাবে এই সমস্যার সমাধান করবে, তা নিয়ে কেনো আলোচনা হয় না?”
তারেক রহমান মনে করেন, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য উৎপাদনমুখী শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তোলার পরিকল্পনা রাজনৈতিক দলগুলোর স্পষ্ট করা উচিত। তিনি বলেন, “আমরা বলি উৎপাদনমুখী শিক্ষা ব্যবস্থা, কিন্তু সেটির বাস্তব রূপরেখা কী হবে, তা কি আমরা ব্যাখ্যা দিচ্ছি?”
এছাড়া পরিবেশ দূষণ প্রতিরোধে সংস্কার পরিকল্পনা গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “পরিবেশ রক্ষায় রাজনৈতিক দলগুলোর সুস্পষ্ট পরিকল্পনা থাকা দরকার। শিল্পায়নের পরিবেশ তৈরি, বিশুদ্ধ খাবার পানির নিশ্চয়তা এবং জ্বালানি সংকট নিরসনের বিষয়ে সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য।”
তারেক রহমান বলেন, জনগণের সমস্যা সমাধানে রাজনৈতিক দলগুলোর সুস্পষ্ট নীতিমালা থাকা উচিত এবং দলগুলো যেন শুধু পারস্পরিক সমালোচনায় না ব্যস্ত থাকে, সেদিকেও নজর দিতে হবে। “সমালোচনা চলবে, তবে সেটি যেন জনগণের মূল সমস্যাগুলো আড়ালে না ফেলে।”
তিনি আরও সতর্ক করে বলেন, “দেশের সম্ভাবনা নষ্ট হয়ে যেতে পারে, যদি রাজনৈতিক দলগুলো শুধু ক্ষমতার লড়াইয়ে মনোযোগ দেয়, কিন্তু জনগণের প্রকৃত সমস্যা নিয়ে কাজ না করে।”
এই ইফতার আয়োজনে বিএনপি, এনডিএম, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টি এবং নাগরিক ঐক্যের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
Leave a comment