ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের বিভিন্ন সদস্য, সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান এবং দলের নামে থাকা ১২৪টি ব্যাংক হিসাব জব্দের আদেশ দিয়েছে আদালত। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. জাকির হোসেন গালিব এই আদেশ দেন।
জব্দ হওয়া ব্যাংক হিসাবগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি অর্থ রয়েছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল ট্রাস্টের নামে, যার পরিমাণ ৪৭৯ কোটি ২৭ লাখ টাকা। এছাড়া সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই), আওয়ামী লীগ, সূচনা ফাউন্ডেশন, বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর এবং আবু সিদ্দিক মেমোরিয়াল ট্রাস্টের একাধিক অ্যাকাউন্টেও বড় অঙ্কের অর্থ রয়েছে।
কার ব্যাংক হিসাবে কত অর্থ জব্দ?
দুদকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, জব্দকৃত ১২৪টি ব্যাংক হিসাবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো:
বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্ট: ৩২টি অ্যাকাউন্টে ৪৭৯.২৭ কোটি টাকা
সিআরআই: ১৬টি অ্যাকাউন্টে ৫৫.৭৩ কোটি টাকা
আওয়ামী লীগ: ৮টি অ্যাকাউন্টে ৩৩.৮৫ কোটি টাকা
সূচনা ফাউন্ডেশন: ৯টি অ্যাকাউন্টে ৩১.৬০ কোটি টাকা
বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর: ২টি অ্যাকাউন্টে ১৯.৩৫ কোটি টাকা
সায়মা ওয়াজেদ পুতুল: ৫টি অ্যাকাউন্টে ২.৭৬ কোটি টাকা
শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার যৌথ হিসাব: ৪টি অ্যাকাউন্টে ২.৭২ কোটি টাকা
শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত হিসাব: ১২টি অ্যাকাউন্টে ১.২৯ কোটি টাকা
রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক: ২টি অ্যাকাউন্টে ১.২৭ কোটি টাকা
সজীব ওয়াজেদ জয়: ২টি অ্যাকাউন্টে ১.১৭ কোটি টাকা
শেখ রেহানা: ২টি অ্যাকাউন্টে ৮১ লাখ টাকা
এছাড়াও, সাবেক খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এবং শেখ হাসিনার আত্মীয় শফিক আহমেদ সিদ্দিকের ব্যাংক হিসাব থেকেও অর্থ জব্দ করা হয়েছে।
সরকারি তদন্তে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, হংকং ও কেম্যান দ্বীপপুঞ্জে শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের সম্পদের খোঁজ পাওয়া গেছে। এমনকি, মালয়েশিয়ার এক ব্যাংক অ্যাকাউন্টে রাশিয়ান ‘স্লাশ ফান্ড’-এর অস্তিত্ব চিহ্নিত হয়েছে।
এদিকে, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পসহ একাধিক দুর্নীতির অভিযোগে শেখ হাসিনা, সজীব ওয়াজেদ জয়, সায়মা ওয়াজেদ, শেখ রেহানা ও তার সন্তানদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে আদালত।
দুর্নীতি দমন কমিশন জানিয়েছে, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা তাদের সম্পদ স্থানান্তর করার চেষ্টা করছেন বলে তদন্তে উঠে এসেছে। এ কারণেই দ্রুত ব্যাংক হিসাব জব্দের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
Leave a comment