Home বিনোদন গান হাছন রাজার বাড়ি ধ্বংসের পথে!
গান

হাছন রাজার বাড়ি ধ্বংসের পথে!

Share
Share

“ভালা করি ঘর বানাইয়া, কয় দিন থাকমু আর
আয়না দিয়া চাইয়া দেখি পাকনা চুল আমার।”

পরিচিত এই কালজয়ী গানের স্রষ্টা মরমি কবি দেওয়ান হাছন রাজা।

সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার রামাপাশায় অবস্থিত হাছন রাজার পৈত্রিক বাড়িটি এখন ধ্বংসের পথে। হাছন রাজার বাড়িটি রক্ষা করতে উদ্যোগ নিচ্ছেন না কেউই। হাছন রাজা তাঁর জীবদ্দশায় লিখেছিলেন, ‘কানার হাতে সোনা দিলে লাল-ধলা চিনবে না’।

মাটিরও পিঞ্জিরার মাঝে বন্দি হইয়া রে,
কান্দে হাছন রাজার মন ময়নায় রে’

গানের এ কথাগুলোর সঙ্গে হাছন রাজার জীবনবোধ যে একেবারে মিলেমিশে একাকার!

জানা গেছে আজ থেকে বহু বছর আগে, হাছন রাজার বাবা দেওয়ান আলী রাজা যিনি সুনামগঞ্জের একজন প্রতাপশালী জমিদার ছিলেন যার আওতায় দুই স্টেটের জমিদারি ছিল।

যার একটি বিশ্বনাথের রামপাশা ও আরেকটি সুনামগঞ্জের লক্ষণশ্রী। রামপাশার জমিদারি দেখাশুনা করতেন হাছন রাজার বড় ভাই উবাইদুর রাজা চৌধুরী। হাছন রাজার যৌবনের প্রারম্ভেই তাঁর বাবা ও একমাত্র বড় ভাইকে হারান। হাছন রাজা মাত্র ১৫ বছর বয়সে দুই স্টেটের জমিদারি পরিচালনা করেন। এখনও সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ, বিশ্বনাথ, সুনামগঞ্জ, লক্ষণশ্রীসহ বিভিন্ন এলাকায় তাঁদের সম্পত্তি রয়েছে। হাছন রাজা রাজকীয় জমিদারি থাকা সত্বেও গড়ে তুলেননি কোনো রাজপ্রাসাদ। বর্তমানে যেটুকু আছে তাও ধ্বংসের পথে।

সরজমিনে দেখা গেছে, হাছন রাজার রামপাশার দুতলা বাড়িটিতে ধ্বংসাবশেষ ছাড়া তেমন কোনো স্মৃতি নেই। যা আছে তাতেও বাসা বেঁধেছে পোকামাকড় আর পরগাছা। ঘরটিতে পশুপাখির মলমূত্রও ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। ঝরে পড়ছে ঘরগুলোর ইট ও প্লাস্টার। অযত্ন আর অবহেলায় পড়ে আছে হাছন রাজার পৈত্রিক ভিটা।

স্থানীয়রা জানান, উদ্যোগ নিয়ে বাড়িটি কিছুটা সংস্কার আর সংরক্ষণ করলেই বাড়িটি হয়ে উঠতো বিশ্বনাথ উপজেলার একমাত্র পর্যটন স্পট। অনেক আগে থেকেই এ দাবি করে আসছিলেন হাছন রাজার ভক্তবৃন্দরা। কয়েকবার উদ্যোগ নিলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। এখন সরকারি বা ব্যক্তি উদ্যোগে হাছন রাজার এ স্মৃতিটুকু বাঁচিয়ে রাখবেন এটাই প্রত্যাশা করেন হাজারো হাছন ভক্তরা।

বাড়ির দায়িত্বে থাকা পংকি মিয়া বলেন, কয়েকবার পরিবার থেকে বাড়িটি সংস্কার করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। পরে আর হয়ে উঠেনি। তাঁর বংশধররা প্রতি ঈদে বাড়িতে আসেন। এলাকার অসহায়দের মাঝে বিভিন্ন সামগ্রী বিতরণ করেন।

স্থানীয় ব্যবসায়ী আবু সুফিয়ান বলেন, হাছন রাজা মরমি সাহিত্যে এক উল্লেখযোগ্য ইতিহাস। তাঁর স্মৃতিটুকু বাঁচিয়ে রাখা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। পরিবার থেকে না হলেও সরকারি উদ্যোগে এই বাড়িটি সংরক্ষণ ও সংস্কার করা এখন সময়ের দাবি।

মো. মিছবাহ উদ্দিন
বিশ্বনাথ (সিলেট) প্রতিনিধি
মোবাইল: ০১৭১৪-৭২ ৭৪ ৬৮

Share

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Don't Miss

মাগুরায় ধর্ষণের শিকার শিশু আছিয়ার মৃত্যু: ন্যায়বিচারের দাবি

মাগুরায় ধর্ষণের শিকার পাঁচ বছরের শিশু আছিয়া চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন) । বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) দুপুর ১টায়...

ধর্ষণ মামলা করায় বাবাকে হত্যা, দুই জেলায় দুই লাশ উদ্ধার

বরগুনায় ধর্ষণ মামলার বাদীকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। অন্যদিকে ঢাকার ধামরাইয়ে এক অজ্ঞাত যুবকের লাশ এবং নরসিংদীর শিবপুরে নিখোঁজের ছয় দিন পর এক অটোরিকশাচালকের...

Related Articles

সাবিনা ইয়াসমিনের হঠাৎ অসুস্থতা, হাসপাতালে নেওয়া হলো কিংবদন্তী শিল্পীকে

গানের মঞ্চে দীর্ঘ সময় পর গান পরিবেশন করতে গিয়েই অসুস্থ হয়ে পড়লেন...

তরুণদের নতুন ভাবনায় কেমন গেল চরকির বছর

দেশের মিডিয়াঙ্গন–সংশ্লিষ্ট অনেকের অভিযোগ, ওটিটি প্ল্যাটফর্ম চরকি নাকি নতুনদের সুযোগ দেয় না।...

জনপ্রিয় গায়কের বিরুদ্ধে ১৩ বছরের কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ

প্রখ্যাত মার্কিন গায়ক জে-জেডের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। গতকাল রোববার তাঁর বিরুদ্ধে...