২০২৫ শিক্ষাবর্ষ শুরু হওয়ার পর ১৪ দিন পেরিয়ে গেলেও দেশের সব শিক্ষার্থীর হাতে পাঠ্যবই পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। এনসিটিবি (জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড) কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মার্চের আগে পুরোপুরি বিতরণ শেষ করা সম্ভব হবে না। এর জন্য তারা ছাপাখানা মালিক এবং কাগজ মিলের ‘সিন্ডিকেটকে’ দায়ী করেছেন।
এনসিটিবির চেয়ারম্যান ড. একেএম রিয়াজুল হাসান জানিয়েছেন, কিছু ছাপাখানা তাদের সক্ষমতার চেয়ে বেশি কাজ নিয়েছে, আর কাগজ মিলগুলো পর্যাপ্ত সরবরাহ করতে ব্যর্থ হয়েছে। যদিও ছাপাখানা মালিকরা অভিযোগ করেছেন, কাগজের দাম বৃদ্ধি, কাঁচামালের সংকট এবং আর্ট কার্ডের ঘাটতি কাজের ধীরগতির প্রধান কারণ।
চলতি শিক্ষাবর্ষে ৪০ কোটি ১৫ লাখ বই ছাপানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করা হলেও ১৩ জানুয়ারি পর্যন্ত মাত্র ১২ কোটি বই বিতরণ সম্ভব হয়েছে। এর মধ্যে প্রাথমিক, মাধ্যমিক, এবং বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের জন্য ব্রেইল বই অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
এনসিটিবি জানিয়েছে, নিম্নমানের কাগজে বই ছাপানোর অভিযোগে কয়েকটি ছাপাখানার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। রাজধানীর মাতুয়াইল এলাকায় অভিযান চালিয়ে ২০ হাজার নিম্নমানের বই এবং ১০ লাখ ফর্মা ধ্বংস করা হয়েছে।
এদিকে এনসিটিবি কর্মকর্তারা জানান, জানুয়ারির শেষে বিদেশ থেকে আমদানি করা আর্ট কার্ড এসে পৌঁছালে ছাপার গতি বাড়বে। তবে শিক্ষাবর্ষের শুরুতেই সব বই বিতরণ না হওয়ায় শিক্ষার্থীদের শিক্ষায় বিঘ্ন ঘটছে।
এ বিষয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, ফেব্রুয়ারির মধ্যেই সব শিক্ষার্থীর হাতে বই পৌঁছানোর জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। তবে দেরির জন্য কাগজ সংকট, টেন্ডার জটিলতা, এবং প্রশাসনিক রদবদলকেও দায়ী করা হয়েছে।
নতুন শিক্ষাবর্ষের জন্য ৪৪১টি পাঠ্যবই পরিমার্জন করা হয়েছে। তবে এই প্রক্রিয়ায় সময় বেশি লাগায় বিতরণে বিলম্ব হয়েছে বলে এনসিটিবি জানিয়েছে। কর্মকর্তারা আশাবাদী যে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই বই বিতরণ শেষ করা সম্ভব হবে।
Leave a comment