বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে শুরু হওয়া “এনহ্যান্সিং ডিজিটাল গভর্নমেন্ট অ্যান্ড ইকোনমি (ইডিজিই)” প্রকল্পটি কার্যক্রমের ধীরগতি এবং অনিয়মের কারণে মুখ থুবড়ে পড়ার দশায় রয়েছে। প্রকল্পের মেয়াদ প্রায় শেষ হলেও এর আর্থিক অগ্রগতি মাত্র ১৪% এবং বাস্তব অগ্রগতি ৩৩%। অসন্তুষ্ট বিশ্বব্যাংক ইতোমধ্যে প্রকল্পের ১৭ কোটি ৫ লাখ ডলার ফেরত নিয়ে গেছে।
২ হাজার ৫০৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ইডিজিই প্রকল্পটি তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ৫ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিল। এর আওতায় ১ লাখ তরুণকে প্রশিক্ষণ দেওয়া, জাতীয় জব পোর্টাল তৈরি, চতুর্থ শিল্প বিপ্লব মোকাবিলার কৌশলপত্র তৈরি, এবং প্রযুক্তি উদ্ভাবনের জন্য গবেষণা কেন্দ্র নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল।
তবে প্রকল্পটি মূলত প্রশিক্ষণ এবং সেমিনারেই সীমাবদ্ধ। এখন পর্যন্ত সাড়ে ১৬ হাজার শিক্ষার্থীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। কিছু দরপত্র এবং আইটি নীতিমালা তৈরির কাজ হলেও, জাতীয় জব পোর্টালসহ অন্যান্য মূল কম্পোনেন্ট চালু করা যায়নি।
বিশ্বব্যাংক প্রকল্পের অগ্রগতিতে অসন্তুষ্ট হয়ে এর বাজেট ২৯৫ মিলিয়ন ডলার থেকে কমিয়ে ১২০ মিলিয়ন ডলার করেছে। প্রকল্পের ধীরগতি, অপ্রয়োজনীয় কার্যক্রম, এবং অনিয়ম নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে, যেখানে বাজেট সংকোচনের সুপারিশ করা হয়েছে।
ন্যাশনাল জব পোর্টাল সম্পন্ন হলেও এটি এখনো চালু করা হয়নি। তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ টিআইএম নূরুল কবীর প্রশ্ন তুলেছেন, “এত গুরুত্বপূর্ণ একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি হয়েও কেন উন্মুক্ত করা হচ্ছে না? এটি দ্রুত চালু হলে দেশের বেকারত্ব কমাতে ভূমিকা রাখবে।”
বিশ্বব্যাংকের অর্থ ফেরত যাওয়ায় এই প্রকল্পের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকারের উচিত দ্রুত প্রকল্পের কার্যক্রম শেষ করা এবং জাতীয় জব পোর্টাল চালু করে কর্মসংস্থান তৈরির সুযোগ তৈরি করা।
ইডিজিই প্রকল্পটি যদি সঠিকভাবে পরিচালিত হতো, তবে এটি দেশের প্রযুক্তি খাতে যুগান্তকারী ভূমিকা রাখতে পারত। কিন্তু ধীরগতি এবং কার্যকর উদ্যোগের অভাবে এটি এখন ব্যর্থতার মুখে।
Leave a comment