১৭ বছর পর বাংলাদেশে ফিরছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান। ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর স্বামী তারেক রহমান ও কন্যা জায়মা রহমানকে নিয়ে লন্ডনে পাড়ি জমিয়েছিলেন তিনি। দীর্ঘ প্রবাসজীবনের অবসান ঘটিয়ে এবার শাশুড়ি, সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেশে ফিরছেন তিনি।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে ৪ মে রোববার লন্ডন থেকে রওনা হবেন তাঁরা, ঢাকায় পৌঁছানোর কথা ৫ মে সকালে। খালেদা জিয়া উন্নত চিকিৎসার জন্য গত ৮ ফেব্রুয়ারি লন্ডনে আসেন এবং চিকিৎসা শেষে বড় ছেলে তারেক রহমানের বাসায় থেকে সেখানেই অবস্থান করছিলেন। চিকিৎসা শেষে প্রায় চার মাস পর ঢাকায় ফিরছেন তিনি।
জুবাইদা রহমানের দেশে ফেরা শুধুই পারিবারিক সফর নয়; রাজনৈতিক দিক থেকেও তা তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, তাঁর বিরুদ্ধে ২০০৮ সালে দায়ের হওয়া দুর্নীতির একটি মামলায় বিচারিক আদালত তাঁকে তিন বছরের কারাদণ্ড ও ৩৫ লাখ টাকা জরিমানা দেয়। তবে ২০২৪ সালের আগস্টে ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানের পর দেশে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে ওই সাজা স্থগিত হয়, ফলে দেশে ফিরে আসার পথ উন্মুক্ত হয় তাঁর জন্য।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করার পর লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজ থেকে মেডিসিনে এমএসসি ডিগ্রি অর্জন করেন জুবাইদা। ১৯৯৫ সালে বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারে প্রথম স্থান অর্জন করে সরকারি চাকরিতে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ২০০৮ সালে শিক্ষা ছুটিতে লন্ডনে যাওয়ার পর দেশে ফিরে আর চাকরিতে যোগ না দেওয়ায় তাঁকে বরখাস্ত করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
জুবাইদা রহমানের পারিবারিক পরিচয়ও উল্লেখযোগ্য। তিনি বাংলাদেশের সাবেক নৌবাহিনী প্রধান এবং জিয়াউর রহমান সরকারের মন্ত্রী রিয়ার অ্যাডমিরাল মাহবুব আলীর মেয়ে। মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল এম এ জি ওসমানী তাঁর চাচা। ১৯৯৪ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি তারেক রহমানের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি।
দীর্ঘ নির্বাসন শেষে জুবাইদা রহমানের এই প্রত্যাবর্তনকে রাজনৈতিক মহলে নানা ব্যাখ্যায় দেখা হচ্ছে। একদিকে এটি একটি পারিবারিক পুনর্মিলনের মুহূর্ত, অন্যদিকে এটি বিএনপির ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব কাঠামোতেও নতুন সম্ভাবনার ইঙ্গিত বহন করছে।
Leave a comment