ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য প্রার্থী এবং ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির ওপর সশস্ত্র হামলার ঘটনায়, তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি এসেছে। হামলায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেল শনাক্তের পর এর মালিক আব্দুল হান্নানকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। এই গ্রেফতারের মাধ্যমে ঘটনাটির নেপথ্য পরিকল্পনা ও সংশ্লিষ্টদের শনাক্তে তদন্ত আরও গভীর পর্যায়ে প্রবেশ করেছে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন ।
রোববার (১৪ ডিসেম্বর) সকালে র্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়, হামলার সময় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটির নম্বর শনাক্ত করা হয়েছে। পরে রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে ওই মোটরসাইকেলের মালিক আব্দুল হান্নানকে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে পল্টন থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
র্যাব জানায়, গ্রেফতারকৃত আব্দুল হান্নানের পিতা মো. আবুল কাশেম। তার স্থায়ী বাড়ি রাজশাহীর চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায়। হামলায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটির নম্বর ছিল ৫৪-৬৩৭৫। তবে হান্নান সরাসরি হামলার সঙ্গে জড়িত ছিলেন কিনা, নাকি অন্য কাউকে মোটরসাইকেলটি ব্যবহার করতে দিয়েছিলেন—সে বিষয়টি যাচাই করা হচ্ছে।
র্যাবের একটি সূত্র জানায়, “আমরা মোটরসাইকেলটির গতিবিধি, ব্যবহারের সময়কাল এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের যোগাযোগের তথ্য বিশ্লেষণ করছি। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তি হামলার পরিকল্পনা বা বাস্তবায়নের সঙ্গে জড়িত কিনা, তা নিশ্চিত হতে আরও তদন্ত প্রয়োজন।”
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে নির্বাচনী প্রচারণাকালে রাজধানীর একটি এলাকায় দুর্বৃত্তদের গুলিতে আহত হন শরিফ ওসমান হাদি। হঠাৎ এই হামলায় এলাকায় চরম উত্তেজনা সৃষ্টি হয় এবং রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাকে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়।
ঢামেকে প্রাথমিক চিকিৎসা ও অস্ত্রোপচার শেষে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে রাজধানীর বেসরকারি হাসপাতাল—এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, হাদির অবস্থা স্থিতিশীল হলেও তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
পল্টন থানা পুলিশ জানিয়েছে, র্যাবের কাছ থেকে হস্তান্তরের পর আব্দুল হান্নানকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। একই সঙ্গে হামলার ঘটনায় ব্যবহৃত অন্যান্য উপকরণ, সম্ভাব্য সহযোগী এবং হামলাকারীদের পরিচয় শনাক্তে কাজ চলছে। পুলিশ বলছে, প্রযুক্তিগত সহায়তা নিয়ে সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ, মোবাইল কল রেকর্ড এবং আর্থিক লেনদেনের তথ্যও পর্যালোচনা করা হচ্ছে।
এদিকে, শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনায় এখনো পর্যন্ত কাউকে সরাসরি হামলাকারী হিসেবে গ্রেফতার করা হয়নি। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আশাবাদী, মোটরসাইকেলের সূত্র ধরে খুব শিগগিরই মূল অপরাধীদের শনাক্ত করা সম্ভব হবে।
Leave a comment