ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত হামাস তাদের অস্ত্র সমর্পণ করবে না বলে স্পষ্ট জানিয়েছে। সংগঠনটি বলেছে, জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি সার্বভৌম ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠন না হওয়া পর্যন্ত তাদের সশস্ত্র প্রতিরোধ চলবে।
চলমান যুদ্ধবিরতি আলোচনা ও আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যেই হামাস তাদের অবস্থান আবারো পরিষ্কার করল। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ প্রতিনিধি স্টিভ উইটকফ দাবি করেছিলেন, হামাস অস্ত্র ত্যাগে সম্মতি জানিয়েছে। তবে এই বক্তব্যকে মিথ্যা আখ্যা দিয়ে হামাস জানায়, প্রতিরোধই তাদের অধিকার এবং এটি তারা ছাড়বে না।
হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে চলা পরোক্ষ আলোচনা এখনো ফলপ্রসূ হয়নি। যুদ্ধ থামানো বা জিম্মিদের মুক্তির ব্যাপারে কোনো সুনির্দিষ্ট চুক্তি হয়নি। এই প্রেক্ষাপটে ফ্রান্স, কানাডাসহ কয়েকটি দেশ ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে ।
একই সঙ্গে, কিছু আরব দেশও চাইছে হামাস যেন গাজা থেকে সরে আসে এবং অস্ত্র ত্যাগ করে। যুক্তরাজ্য বলেছে, ইসরায়েল নির্ধারিত কিছু শর্ত পূরণ না করলে তারাও সেপ্টেম্বরের মধ্যে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিতে পারে।
এদিকে, ইসরায়েলের সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল এয়াল জামির হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, যদি জিম্মিদের বিষয়ে কোনও সমাধান না আসে, তাহলে গাজায় অভিযান চলবে। সম্প্রতি হামাস একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে, যেখানে ইসরায়েলি জিম্মি ‘ইভিয়াতার ডেভিডকে’ অসুস্থ অবস্থায় একটি সুড়ঙ্গে দেখা যায়। তার পরিবার হামাসকে দায়ী করে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রকে আহ্বান জানিয়েছে।
মার্কিন দূত স্টিভ উইটকফ বর্তমানে ইসরায়েলে অবস্থান করছেন এবং গাজার মানবিক সংকট, জিম্মি ইস্যু ও শান্তি আলোচনার বিষয় নিয়ে বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে বৈঠক করছেন। তিনি গাজার দক্ষিণাঞ্চলে একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্র পরিদর্শন করেন, যা যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল সমর্থিত একটি সংস্থা পরিচালনা করছে।
তবে জাতিসংঘ জানিয়েছে, এই কেন্দ্রগুলোর আশপাশে খাবার নিতে গিয়ে এখন পর্যন্ত ১,৩৭০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। তারা দাবি করছে, ইসরায়েলি সেনারা বেসামরিকদের লক্ষ্য করে গুলি চালাচ্ছে।
ইসরায়েল এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলছে, হামলার জন্য হামাসই দায়ী। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর থেকে ইসরায়েলি অভিযানে গাজায় ৬০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যে দেখা গেছে, এখন পর্যন্ত ৯৩ জন শিশুসহ অন্তত ১৬৯ জন ক্ষুধা ও অপুষ্টিতে প্রাণ হারিয়েছে। ইসরায়েল বলছে, তারা সাহায্য আটকে রাখছে না। তবে জাতিসংঘ একে মানবসৃষ্ট ও প্রতিরোধযোগ্য দুর্ভিক্ষ বলে চিহ্নিত করেছে।
সূত্র: বিবিসি
Leave a comment