ক্রিকেট মাঠে ম্যাচের নাটকীয়তা নতুন কিছু নয়, তবে মাঠের বাইরেও এমন মজার দৃশ্য দেখা যাবে—তা হয়তো কেউ ভাবেননি। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের একাডেমি মাঠে দেখা গেল এক অদ্ভুত দৃশ্য। মাঠে অভিনয়ের ছলে ‘পুনরাবৃত্তি’ হচ্ছিল আগের দিনের এক বিতর্কিত স্টাম্পিংয়ের! শাইনপুকুরের মিনহাজুল আবেদীন সাব্বির আর গুলশান ক্রিকেট ক্লাবের উইকেটরক্ষক আলিফ হাসান যেন মঞ্চে অভিনয় করছেন—সঙ্গে বিসিবির দুর্নীতি দমন বিভাগের প্রধান রাইয়ান আজাদ ও কর্মকর্তারা, এবং সাংবাদিকদের ক্যামেরা।
ঘটনার সূত্রপাত ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের একটি ম্যাচে। সেখানে মিনহাজুলের স্টাম্পিংটি এতটাই অস্বাভাবিক মনে হয়েছিল, যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সেটি নিয়ে হাস্যরস শুরু হয়। বিসিবির দুর্নীতি দমন ইউনিট সেই ঘটনার তদন্তে নামে, কিন্তু তদন্তের ধরন নিয়েই উঠেছে প্রশ্ন। স্টাম্পিংয়ের দৃশ্য অভিনয়ের মতো করে ভিডিও ধারণ, ফেসবুকে ‘চা পানের দাওয়াত’ দেওয়া রাইয়ান আজাদের পোস্ট—সবকিছু মিলে সেটি যেন হয়ে দাঁড়ায় একরকম লোক দেখানো প্রদর্শনী।
সামাজিক মাধ্যমে ইতিমধ্যেই অনেকে প্রশ্ন তুলছেন, এটা কি সত্যিই তদন্ত, নাকি শুধু মিডিয়ার দৃষ্টি আকর্ষণের এক কৌশল? এমন প্রকাশ্য তদন্ত কি আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে গ্রহণযোগ্য? বিসিবি বলছে, বিষয়টি প্রক্রিয়ারই অংশ—কিন্তু সেই প্রক্রিয়া যদি এমন হাস্যকর রূপ নেয়, তাহলে তো গোটা তদন্তই প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ে।
তদন্তের পেছনে থাকা ঘটনাগুলোর দিকে তাকালেও দেখা যায় অস্বাভাবিকতা। বিশেষ করে মিনহাজুলের স্টাম্পিংটি। ব্যাটসম্যান সুযোগ থাকা সত্ত্বেও ব্যাট দাগে নামাননি, উইকেটরক্ষক প্রথম চেষ্টায় স্টাম্প ভাঙতে ব্যর্থ হলেও তিনি ব্যাট শূন্যে তুলে রেখেছিলেন—আর তাতেই আউট!
এই ঘটনার আগেও ম্যাচের ৩৬তম ওভারে রহিম আহমেদের একটি আউট নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে, যেখানে ব্যাটে বল না লাগিয়েও তিনি ফেরত চলে যান, যেন আগে থেকেই ঠিক করা ছিল কিছু!
সব মিলিয়ে, মাঠে যেমন রহস্য, মাঠের বাইরে বিসিবির তদন্তও যেন এক রহস্যময় নাটক! এই নাটক শেষ পর্যন্ত সত্য প্রকাশ করবে, নাকি শুধুই আরও কৌতূহল আর হাস্যরস তৈরি করে থেমে যাবে—তা সময়ই বলে দেবে।
Leave a comment