সোনার বাজারে টানা বৃদ্ধির পর অবশেষে দাম কিছুটা কমেছে। ভরিতে প্রায় সাড়ে তিন হাজার টাকা বেড়ে ইতিহাসের সর্বোচ্চ দামে পৌঁছানোর একদিন পরই বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস) সোনার দাম কমানোর ঘোষণা দিয়েছে। বুধবার রাতে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়, স্থানীয় বাজারে খাঁটি সোনার দাম কমার কারণে এ সমন্বয় আনা হয়েছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে নতুন দর কার্যকর হবে।
বাজুস জানিয়েছে, প্রতি ভরি ২২ ক্যারেট হলমার্ক সোনা এখন থেকে বিক্রি হবে ১ লাখ ৮৮ হাজার ১৫২ টাকায়, যা আজকের তুলনায় ১ হাজার ৪৭০ টাকা কম। ২১ ক্যারেট সোনা ভরিতে কমবে ১ হাজার ৩৯৯ টাকা, বিক্রি হবে ১ লাখ ৭৯ হাজার ৬০৩ টাকায়। ১৮ ক্যারেট সোনা ভরিতে কমছে ১ হাজার ২০২ টাকা, নতুন দাম হবে ১ লাখ ৫৩ হাজার ৯৪১ টাকা। আর সনাতন পদ্ধতির সোনার দাম ভরিতে কমবে ১ হাজার ২৭ টাকা, যা দাঁড়াবে ১ লাখ ২৭ হাজার ৬৭৪ টাকায়।
এর আগে চলতি মাসে ছয় দফায় সোনার দাম বাড়তে বাড়তে রেকর্ড ১ লাখ ৮৯ হাজার ৬২২ টাকায় পৌঁছেছিল, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। সর্বশেষ বুধবার দাম বেড়েছিল ভরিতে ৩ হাজার ৬৭৫ টাকা। কিন্তু বৃহস্পতিবার থেকে সেই রেকর্ড দামের চেয়ে প্রায় দেড় হাজার টাকা কমে বিক্রি হবে সোনা।
বিশ্ব অর্থনীতির ওঠানামার সঙ্গেই জড়িত থাকে সোনার বাজার। অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা দেখা দিলে বিনিয়োগকারীরা সোনায় ঝুঁকেন, ফলে দাম বেড়ে যায়। ঐতিহাসিকভাবে উচ্চ মূল্যস্ফীতির সময়েও সোনার দাম দ্রুত বাড়তে দেখা গেছে। ২০২০ সালে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ চলাকালে বিশ্ববাজারে সোনার দাম আউন্সপ্রতি ২ হাজার ৭০ ডলার ছাড়িয়েছিল।
বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে সোনার দাম আরও ঊর্ধ্বমুখী। ভূরাজনৈতিক অস্থিরতা ও বৈশ্বিক বিনিয়োগকারীদের উদ্বেগের কারণে আউন্সপ্রতি দাম এখন ৩ হাজার ৬০০ ডলার ছাড়িয়েছে। গত মঙ্গলবার স্পট মার্কেটে একপর্যায়ে প্রতি আউন্স সোনার দর ওঠে ৩ হাজার ৬৮৬ ডলারে। মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ সুদহার কমানোর ইঙ্গিত দেওয়ায় সোনার দামে আরও চাপ পড়েছে।
বাংলাদেশের বাজারে এই আন্তর্জাতিক প্রভাব সরাসরি প্রতিফলিত হলেও স্থানীয় চাহিদা ও সরবরাহের অবস্থাও দামের ওঠানামায় বড় ভূমিকা রাখে।
Leave a comment