রাজধানীর ব্যস্ত সড়কে প্রকাশ্যে এক তরুণকে এলোপাতাড়ি কোপানোর একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওটিতে দেখা যায়, রাতের অন্ধকারে আলো ঝলমলে সড়কে যানবাহন ও পথচারীর উপস্থিতির মাঝেই তিন যুবক মিলে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এক ব্যক্তির ওপর হামলা চালাচ্ছেন। হামলার পর দুর্বৃত্তরা মোটরসাইকেলে করে দ্রুত সরে পড়েন।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা গেছে, গত রোববার রাত সাড়ে ১১টার দিকে সেন্ট্রাল রোডের ভূতের গলির প্রবেশমুখে ঘটনাটি ঘটে। আহত যুবকের নাম সাইফ হোসেন মুন্না (২৮)। তিনি কলাবাগান থানার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের বিএনপির একজন সক্রিয় কর্মী। বর্তমানে তিনি জাতীয় অর্থোপেডিক ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান (পঙ্গু হাসপাতাল)–এ চিকিৎসাধীন।
পুলিশ জানায়, ঘটনার দিন রাতে কাজ শেষে বাসায় ফিরছিলেন মুন্না। সেন্ট্রাল রোডে পৌঁছালে মামুন নামের একজন ব্যক্তি তাঁর পথ রোধ করেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই মোটরসাইকেলে এসে যোগ দেন এম সি শুভ, রানা ও মোবারক নামের আরও তিনজন। মামুন প্রথমে মুন্নাকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দেন। এরপর শুভ ধারালো অস্ত্র দিয়ে একের পর এক কোপাতে শুরু করেন। পরে অন্যরাও হামলায় অংশ নেন। হামলা শেষে সবাই মোটরসাইকেলে চড়ে দ্রুত সরে যান।
নিউমার্কেট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম মাহফুজুল হক বলেন, “সাইফ হোসেন মুন্নার ওপর হামলার ঘটনায় পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে মামলা হয়েছে। অজ্ঞাতপরিচয় আরও কয়েকজনকেও আসামি করা হয়েছে।” তিনি জানান, এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি, তবে হামলাকারীদের ধরতে অভিযান চালানো হচ্ছে।
পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, হামলার ভিডিও বিশ্লেষণ এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের জবানবন্দি নিয়ে আসামিদের শনাক্ত করা হয়েছে। রাজনৈতিক বিরোধের কারণেই এই হামলা চালানো হয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ভুক্তভোগীর পরিবার জানিয়েছে, মুন্না দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির স্থানীয় কর্মী হিসেবে সক্রিয় ছিলেন। সম্প্রতি রাজনৈতিক তৎপরতা ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কিছু বক্তব্য দেওয়ার পর থেকেই তিনি হুমকির মুখে ছিলেন বলে পরিবারের দাবি।
ঘটনার ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিন্দার ঝড় উঠেছে। অনেকে প্রকাশ্যে এমন হামলার ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
এই ঘটনায় এখনো কাউকে গ্রেপ্তার না করায় পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন ভুক্তভোগীর স্বজনেরা। তাঁরা দ্রুত দোষীদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি করেছেন।
Leave a comment