Home Uncategorized সুপ্রিম কোর্টের রায়ে পশ্চিমবঙ্গে ২৬ হাজার শিক্ষক-অশিক্ষকের চাকরি বাতিল
Uncategorized

সুপ্রিম কোর্টের রায়ে পশ্চিমবঙ্গে ২৬ হাজার শিক্ষক-অশিক্ষকের চাকরি বাতিল

Share
Share

 

পশ্চিমবঙ্গে স্কুল সার্ভিস কমিশনের (এসএসসি) মাধ্যমে নিয়োগ পাওয়া প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক ও অশিক্ষকের চাকরি বাতিল করেছেন ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। আজ বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না ও বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করেন।

এই রায়ে পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষাঙ্গনে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। আদালত জানিয়েছেন, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির বিস্তর অভিযোগ ছিল। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়সহ বেশ কয়েকজন তৃণমূল নেতা ও সরকারি কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা এখনো কারাগারে রয়েছেন।

এর আগে কলকাতা হাইকোর্ট প্রথমে ২৫,৭৫২ জনের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিল। তখন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই রায়কে ‘বিজেপির ইন্ধনে দেওয়া রায়’ বলে দাবি করেন এবং সুপ্রিম কোর্টে আপিলের ঘোষণা দেন। তবে সর্বোচ্চ আদালতও নিয়োগ বাতিলের আদেশ বহাল রেখেছে।

সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে, রাজ্য সরকার ঘুষের বিনিময়ে ওএমআর শিট জালিয়াতি করে চাকরি দিয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, অনেক প্রার্থী সাদা খাতা জমা দিয়েও চাকরি পেয়েছেন। ২০১৬ সালে ৩০ লাখ আবেদনকারীর মধ্য থেকে যাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল, তাদের মধ্যে অনিয়মের মাধ্যমে চাকরি পাওয়া অনেকের নাম উঠে এসেছে।

সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, আগামী তিন মাসের মধ্যে নতুন করে নিয়োগ পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে, যাতে প্রকৃত যোগ্য প্রার্থীরা আবার সুযোগ পান।

এই রায়ের পর বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেছেন, “আমরা প্রকৃত চাকরিহারাদের পাশে আছি এবং তাদের আইনি সহায়তা দিতে প্রস্তুত।”

অন্যদিকে এসএসসির চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার দাবি করেছেন, “দুর্নীতির কারণে ৫ হাজার চাকরিপ্রাপ্তের নাম উঠে এলেও, একসঙ্গে ২৫ হাজারের বেশি চাকরি বাতিল করা হয়েছে, যা ন্যায্য নয়। তাই আমরা সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধে পুনর্বিবেচনার আবেদন করব।”

বিরোধীরা বলছেন, রাজ্য সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে যোগ্য ও অযোগ্য প্রার্থীদের এক কাতারে রেখেছে, যাতে পুরো বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়া যায়। তারা মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি তুলেছেন।

তবে, আদালত ক্যানসারে আক্রান্ত প্রার্থী সোমা দাসের চাকরি বাতিল করেননি।

এই রায়ের ফলে হাজার হাজার চাকরিহারা মানুষ ক্ষোভে ফুঁসছেন। তারা বিক্ষোভে নেমেছেন এবং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি করছেন। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী, তিন মাসের মধ্যে পুনরায় নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হলে এই চাকরিপ্রার্থীদের আবারও পরীক্ষা দিতে হবে। তবে নতুন নিয়োগে কতজন তাদের চাকরি ফিরে পাবেন, তা নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে।

Share

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Don't Miss

বকশীগঞ্জে গাড়িচাপায় প্রাণহানি ঘটেছে যুবকের

জামালপুরের বকশীগঞ্জ-রৌমারী মহাসড়কে গাড়ির চাপায় নিহত হয়েছেন তারেকুর রহমান মনু (২২) নামে এক যুবক। এ দুর্ঘটনা ঘটে সোমবার (১৪ জুলাই) রাত ১০টার দিকে।...

দাবানলে পুড়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ঐতিহাসিক গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন লজ

আবারও ভয়াবহ দাবানলের শিকার হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এবার দাবানলে অ্যারিজোনার গ্র্যান্ড ক্যানিয়নের কাছের দেশটির ৯৬ বছরের পুরনো ঐতিহাসিক গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন লজ এবং একটি পানি...

Related Articles

হাসিনাকন্যা পুতুলকে অনির্দিষ্টকালের ছুটিতে পাঠিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

অনির্দিষ্টকালের ছুটিতে পাঠানো হয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)-এর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের (সিয়ারো)...

লিবিয়ায় পাচারকারীদের কাছে দেড় বছর বন্দি, অবশেষে মুক্তি পেল দুই বাংলাদেশি

দেড় বছরের বেশি সময় পর লিবিয়ার ভয়াবহ বন্দিদশা থেকে মুক্ত হয়ে দুই...

মুন্সীগঞ্জে মোটর সাইকেলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নিহত হয়েছে চালক

ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে মোটর সাইকেলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাসের পিছনে ধাক্কা খেয়ে নিহত হয়েছেন...

গাজায় ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির শর্তে রাজি হয়েছে ইসরায়েল

দখলদার ইসরায়েল , ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের সঙ্গে ৬০ দিনের অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির...