খুলনার কয়রা ও শ্যামনগর অঞ্চলের বিভিন্ন খাল-নদীতে জেলের ছদ্মবেশে সুন্দরবনে প্রবেশ করে অবৈধভাবে মাছ ধরা ও হরিণ শিকারের অভিযোগ বেড়েছে। গত ১০ দিনে একাধিক অভিযানে বনরক্ষীরা ৫১ জন অনুপ্রবেশকারীকে আটক করেছেন, জব্দ হয়েছে নৌকা-ট্রলার, জাল, ৩৪০ কেজি মাছ, ৯০ কেজি কাঁকড়া, বিষের বোতল এবং এক হাজারের বেশি হরিণ শিকারের ফাঁদ।
রোববার সকালে পাটকোষ্টা টহল ফাঁড়ির কর্মকর্তারা একটি নৌকা থেকে গুইসাপের মাংস ও কাঁকড়ার ফাঁদ উদ্ধার করেন। এক দিন আগেই শতমুখী খাল থেকে পাঁচজনকে গুইসাপ শিকারের সময় আটক করা হয়েছিল। এর আগে হরমল খালে বিষ দিয়ে মাছ ধরার অভিযোগে আরও পাঁচজনকে ধরা হয়।
সুন্দরবনের বাইরে হরিণের মাংস পাচারও বাড়ছে। ৮ সেপ্টেম্বর কয়রার তেঁতুলতলায় স্থানীয়রা মোটরসাইকেলে বহন করা প্রায় ১২ কেজি হরিণের মাংস উদ্ধার করে পুলিশে দেয়। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে প্রতিদিন বনের ভেতরে হরিণ শিকার চলছে।
প্রকৃত জেলেরা বলছেন, বৈধ লাইসেন্স নিয়ে বনে প্রবেশ করলেও তারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। কয়রার জেলে আবু মুসা বলেন, “আমরা সামান্য ভুল করলেও লাইসেন্স বাতিল হয়, কিন্তু অবৈধভাবে যারা ঢোকে তারা অল্পদিনে ছাড়া পেয়ে আবার বনে নামে। বিষ দিয়ে মাছ-কাঁকড়া মেরে ফেলছে, আমরা পথে বসে যাচ্ছি।”
উপকূল ও সুন্দরবন সংরক্ষণ আন্দোলনের সদস্যসচিব সাইফুল ইসলাম জানান, এভাবে অবৈধ প্রবেশ চলতে থাকলে নদী-খাল উজাড় হয়ে যাবে, বিলীন হবে হরিণসহ বহু বন্যপ্রাণী। তিনি এখনই কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।
পশ্চিম সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এ জেড এম হাছানুর রহমান বলেন, সীমিত জনবল নিয়েও স্মার্ট টহল ও হেঁটে অভিযান চালানো হচ্ছে। অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে, পাশাপাশি দায়িত্বে অবহেলা হলে বনকর্মীদের বিরুদ্ধেও শাস্তিমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
Leave a comment