নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলায় মো. সামাদ মোল্যা (২২) নামে এক কলেজ শিক্ষার্থী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে জানা গেছে। সোমবার (৩ নভেম্বর) সকাল ১১টার দিকে লোহাগড়া পৌরসভার কুন্দশী গ্রামে এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। মৃত সামাদ মোল্যা ওই গ্রামের মো. ফারুক মোল্যার ছেলে। তিনি লোহাগড়া উপজেলার লাহুড়িয়া কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন।
লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শরিফুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায় এবং পরে হাসপাতাল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। প্রাথমিক তদন্ত শেষে আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, রোববার (২ নভেম্বর) ঢাকা থেকে সামাদ নিজ গ্রামে ফেরেন। পরদিন সকাল ১০টার দিকে তার মা, আলোমতি বেগম, ছেলেকে ভাত খাওয়ার জন্য ডাকেন। তখন সামাদ বলেন, ‘আমি একটু পরে খাব।’ এরপর আলোমতি পাশের বাড়িতে টাকা আনতে যান।
কিছুক্ষণ পর ফিরে এসে তিনি ঘরের আড়ার সঙ্গে গামছা পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় ছেলেকে ঝুলতে দেখেন। চিৎকার শুনে পরিবারের অন্যান্য সদস্য ও প্রতিবেশীরা এগিয়ে এসে সামাদকে দ্রুত উদ্ধার করে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক সামাদকে মৃত ঘোষণা করেন।
সামাদের মা আলোমতি বেগম বলেন,“আমার ছেলে কেন এমন করল, আমি কিছুই বুঝতে পারছি না। সে স্বাভাবিকভাবেই আচরণ করছিল। কোনো ঝামেলা বা চিন্তার কথা কখনও বলেনি।” লোহাগড়া থানার ওসি মো. শরিফুল ইসলাম বলেন,“আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। প্রাথমিকভাবে এটি আত্মহত্যা বলেই মনে হচ্ছে। তবে মৃত্যুর পেছনে অন্য কোনো কারণ আছে কি না, তা যাচাই করা হচ্ছে।”
তিনি আরও জানান,“মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নড়াইল সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে প্রকৃত কারণ জানা যাবে।” সাম্প্রতিক সময়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে তরুণদের আত্মহত্যার ঘটনা বাড়ছে বলে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন। মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, পরিবার ও সমাজের মধ্যে যোগাযোগহীনতা, মানসিক চাপ, হতাশা এবং সামাজিক প্রত্যাশার চাপ অনেক তরুণকে বিপর্যস্ত করে তুলছে।
তারা পরামর্শ দিচ্ছেন, পরিবারের সদস্যদের উচিত তরুণদের মানসিক অবস্থার প্রতি সংবেদনশীল থাকা এবং তাদের সঙ্গে নিয়মিত কথা বলা। পাশাপাশি স্থানীয় পর্যায়ে মানসিক স্বাস্থ্য সেবা ও কাউন্সেলিং সুবিধা সম্প্রসারণের ওপরও জোর দিচ্ছেন তারা।
Leave a comment