রাজধানীর খিলক্ষেত থেকে জনতা ব্যাংকের উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মুশফিকুর রহমান নিখোঁজ হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টার পর থেকে তার কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। এ ঘটনায় মুশফিকুর রহমানের সন্ধান চেয়ে তার পরিবার খিলক্ষেত থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।
খিলক্ষেত থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাজ্জাদ হোসেন প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, পুলিশ নিখোঁজ ব্যাংক কর্মকর্তা মুশফিকুর রহমানের খোঁজে মাঠে নেমেছে। প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার জুমার নামাজের জন্য বাসা থেকে বের হয়েছিলেন মুশফিকুর রহমান। কিন্তু, তিনি মসজিদে যাননি, এটা নিশ্চিত হওয়া গেছে। তার অবস্থান নির্ণয়ে পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তা নিচ্ছে।
জনতা ব্যাংকের কোম্পানি সচিব আবদুল আলিম খান জানান, শুক্রবার দুপুর ১২টা ১৫ মিনিটে মুশফিকুর রহমান বাসার সামনে থেকে একটি রিকশায় উঠেছিলেন। এরপর থেকে তার অবস্থান আর জানা যায়নি।
পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, মুশফিকুর রহমান নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে তার মোবাইল ফোনের যোগাযোগও বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। একাধিক চেষ্টা সত্ত্বেও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, এর আগেও মুশফিকুর রহমান কোনোদিন নিখোঁজ হননি, তাই এই ঘটনায় তারা ব্যাপক উদ্বিগ্ন।
এদিকে, মুশফিকুর রহমানের সহকর্মী জনতা ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, তিনি একজন অত্যন্ত সজ্জন ব্যক্তি এবং কর্মদক্ষতার জন্য সকলের মধ্যে সম্মানিত। তার নিখোঁজ হওয়া ব্যাংকটির জন্যও একটি বড় অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মুশফিকুর রহমানের নিখোঁজ হওয়ার ঘটনাটি খিলক্ষেত এলাকায় দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং এলাকাবাসীসহ আত্মীয়-স্বজনেরা তার সন্ধান পেতে সাহায্য করার জন্য এগিয়ে আসেন। পুলিশের পক্ষ থেকে সব ধরনের সম্ভাবনার ওপর ভিত্তি করে তদন্ত চলছে। তারা ঘটনাস্থলসহ আশপাশের এলাকায় সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহের চেষ্টা করছে।
কিছুজন ধারণা করছেন, নিখোঁজ হওয়ার পেছনে ব্যক্তিগত বা পেশাগত কোনো কারণ থাকতে পারে, তবে এখনও সেসব বিষয়ে কিছু নিশ্চিত করা যায়নি। পুলিশ তদন্তের পরই নিশ্চিত হবে, তার নিখোঁজ হওয়ার পেছনে কোনো বিশেষ কারণ ছিল কি না।
এছাড়া, পরিবার থেকে জানান হয়েছে, মুশফিকুর রহমানের আচরণগতভাবে কোনো পরিবর্তন ছিল না, তিনি কিছুদিন আগে অফিসে ফিরেছেন এবং তার কাজের প্রতি মনোযোগী ছিলেন। তাই নিখোঁজ হওয়ার ঘটনাটি অত্যন্ত রহস্যজনক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এ ঘটনায় খিলক্ষেত থানার পুলিশ কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন, তারা তথ্যপ্রযুক্তি এবং অন্যান্য আধুনিক সরঞ্জাম ব্যবহার করে মুশফিকুর রহমানের খোঁজে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন। পুলিশ জানায়, মুশফিকুর রহমানের নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা এলাকায় আরও উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে এবং তারা সকলকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
তদন্তকারী কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা সব দিক দিয়ে বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন এবং যত দ্রুত সম্ভব নিখোঁজ ব্যক্তির সন্ধান পাওয়ার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়া, পরিবার ও সহকর্মীরা জোর দাবি জানিয়েছেন, মুশফিকুর রহমান যেন দ্রুত ফিরে আসেন এবং তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়।
বর্তমানে, মুশফিকুর রহমানের সন্ধান পাওয়ার জন্য পুলিশ, গোয়েন্দা বিভাগ এবং স্থানীয় প্রশাসন একযোগে কাজ করছে। এরই মধ্যে স্থানীয় মসজিদ ও অন্যান্য জায়গায় মুশফিকুর রহমানের খোঁজ নেওয়ার জন্য সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
অন্যদিকে, মুশফিকুর রহমানের নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন মন্তব্য আসছে, কিছু মন্তব্যে তার পরিবারের উদ্বেগ এবং সমাজের প্রতি প্রত্যাশা প্রকাশ করা হচ্ছে।
এদিকে, জনতা ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মুশফিকুর রহমানের সন্ধান পাওয়ার জন্য একযোগে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ নিতে শুরু করেছেন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন।
সংশ্লিষ্টদের মতে, মুশফিকুর রহমানের নিখোঁজ হওয়া অত্যন্ত উদ্বেগজনক এবং দ্রুত তদন্ত ও ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজন।
এ বিষয়ে খিলক্ষেত থানার পুলিশ অফিসারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তাদের পক্ষ থেকে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে এবং মুশফিকুর রহমানের সন্ধান পাওয়ার জন্য সম্ভাব্য সব দিক পরীক্ষা করা হচ্ছে।
Leave a comment