ম্যাকডোনাল্ডসে অর্ডার নেওয়ার প্রক্রিয়ায় পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত নতুন চ্যালেঞ্জ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে । স্পর্শকাতর কিয়স্কের মাধ্যমে অর্ডার গ্রহণের ফলে জীবাণু সংক্রমণের আশংকা বেড়েছে, যা গ্রাহকদের অতিরিক্ত সতর্ক থাকতে বাধ্য করছে।
যুক্তরাজ্যের একটি প্রখ্যাত সংবাদপত্র মেট্রো কর্তৃক পরিচালিত এক গবেষণায়, ম্যাকডোনাল্ডসের বিভিন্ন শাখায় ব্যবহৃত স্পর্শকাতর কিয়স্ক থেকে অন্ত্র ও মলজীবাণুর উপস্থিতি খুঁজে পাওয়া গেছে। গবেষণায় ম্যাকডোনাল্ডসের আটটি শাখা থেকে সংগৃহীত নমুনায় এমন কিছু জীবাণু শনাক্ত করা হয়েছে, যা সাধারণত মানুষের অন্ত্রের পাশাপাশি মাটি ও উদ্ভিদেও পাওয়া যায়। এই জীবাণুগুলির মধ্যে বিশেষ করে কোলিফর্ম ব্যাকটেরিয়া এবং লিস্টেরিয়া অত্যাধিক বিপদজনক।
লন্ডন মেট্রোপলিটন বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজির সিনিয়র লেকচারার ডঃ পল মেটেওয়েল জানান, “আমরা অত্যন্ত বিস্মিত হয়েছি যে স্পর্শকাতর কিয়স্কগুলিতে এত উচ্চমাত্রায় অন্ত্র এবং মলজীবাণু ছিল। এই জীবাণুগুলো হাসপাতালে সৃষ্ট সংক্রমণের মতো ঝুঁকি তৈরি করে।” বিশেষ করে লিস্টেরিয়া জীবাণুর উপস্থিতি, যা লিস্টেরিওসিস নামক মারাত্মক রোগের কারণ হতে পারে, ৬৫ বছরের উপর এবং গর্ভবতী মহিলাদের জন্য গুরুতর হুমকির সৃষ্টি করে।
ম্যাকডোনাল্ডস ২০১৫ সালে যুক্তরাজ্যে স্পর্শকাতর কিয়স্ক ব্যবহার শুরু করেছিল। এরপর থেকে কানাডা, অস্ট্রেলিয়া সহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক বাজারে এ প্রযুক্তি ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে এই প্রযুক্তির ব্যাপক প্রসারের পরিকল্পনা চালু হয়েছে, যেখানে প্রতি ত্রৈমাসিকে ১,০০০টি দোকানে স্পর্শকাতর কিয়স্ক স্থাপন করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ চলছে।
অর্ডার গ্রহণের প্রক্রিয়ায় গ্রাহকদের স্বয়ংক্রিয় কিয়স্ক ব্যবহারের ফলে একদিকে যেমন খরচ বাড়ার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে, অন্যদিকে স্বাস্থ্যঝুঁকিও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ম্যাকডোনাল্ডস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে, প্রতিদিন বারবার স্পর্শকাতর কিয়স্কগুলোকে জীবাণুমুক্তকরণের জন্য নির্দিষ্ট স্যানিটাইজার ব্যবহার করে পরিষ্কার করা হয়। পাশাপাশি, প্রতিটি শাখায় গ্রাহকদের হাত ধোয়ার সুবিধাও প্রদান করা হচ্ছে। তবে, এক জরিপে দেখা গেছে যে, যুক্তরাজ্যের প্রায় ১,০০০ জনের মধ্যে এক তৃতীয়াংশ মানুষ তাদের স্মার্টফোন পরিষ্কার করে না, যা জীবাণু সংক্রমণের কারণ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে ।
Leave a comment