ময়মনসিংহে র্যাবের নিয়মিত চেকপোস্ট অভিযানে আন্তঃজেলা ডাকাত চক্রের ছয় সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযানের সময় তাদের কাছ থেকে দেশীয় অস্ত্র, ডাকাতিতে ব্যবহৃত বিভিন্ন সরঞ্জাম এবং একটি প্রাইভেটকার উদ্ধার করা হয়। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এবং সংঘবদ্ধ অপরাধ দমনে এ ধরনের অভিযান আরও জোরদার করা হবে বলে জানিয়েছে র্যাব।
র্যাব-১৪ সদর দফতর থেকে রোববার (১৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এর আগে শনিবার দিবাগত রাত আনুমানিক দুইটার দিকে ময়মনসিংহ সদর উপজেলার দাপুনিয়া বাজার এলাকার খেজুরতলা মোড়ে এই অভিযান পরিচালিত হয়। ফুলবাড়ীয়া-ময়মনসিংহ সড়কের গুরুত্বপূর্ণ এই স্থানে একটি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের সামনে চেকপোস্ট বসিয়ে যানবাহন তল্লাশি করছিল র্যাব সদস্যরা।
গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন—আব্দুল হালিম (৫০), জাকির হোসেন (২১), জালাল উদ্দিন (৫০), আলম মিয়া (৪০), আল আমিন (৩০) এবং শফিকুল ইসলাম (২৭)। তাদের মধ্যে শফিকুল ইসলাম বগুড়া জেলার সোনাতলা থানার বাসিন্দা এবং অন্যরা ময়মনসিংহ ও আশপাশের জেলার বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা ।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়, চেকপোস্টে দায়িত্ব পালনকালে রাতের আঁধারে ময়মনসিংহগামী একটি প্রাইভেটকারকে থামানোর সংকেত দেন র্যাব সদস্যরা। গাড়িটি থামানোর পর চালকসহ ভেতরে থাকা যাত্রীদের আচরণ সন্দেহজনক মনে হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা গাড়িতে থাকা ব্যাগের বিষয়ে স্পষ্ট কোনো তথ্য দিতে পারেননি এবং কথাবার্তায় অসংলগ্নতা লক্ষ্য করা যায়।
র্যাবের একটি সূত্র জানায়, সন্দেহের ভিত্তিতে গাড়িতে থাকা ব্যক্তিদের আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে একপর্যায়ে তারা সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য বলে স্বীকার করেন। এরপর তাদের শরীর ও প্রাইভেটকারটি তল্লাশি করে তিনটি চাপাতি, একটি লোহার ছুরি, একটি হাতুড়িসহ ডাকাতিতে ব্যবহারের উপযোগী বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। এসব অস্ত্র ও সরঞ্জাম বহন এবং রাতের বেলায় একসঙ্গে চলাচলের বিষয়টি তাদের অপরাধমূলক উদ্দেশ্যকে স্পষ্ট করে তোলে।
র্যাব কর্মকর্তারা জানান, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই চক্রটি বিভিন্ন জেলায় সক্রিয়ভাবে ডাকাতির প্রস্তুতি নিত এবং সুযোগ বুঝে মহাসড়ক বা নির্জন এলাকায় চলাচলকারী যানবাহন ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলার পরিকল্পনা করত। চেকপোস্টে তল্লাশির ফলে সম্ভাব্য একটি বড় ধরনের অপরাধ সংঘটনের আগেই তাদের আটক করা সম্ভব হয়েছে।
ময়মনসিংহ র্যাব-১৪ সদর দফতরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সামসুজ্জামান বলেন, “গ্রেফতার ছয়জনকে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র বহন ও ডাকাতির প্রস্তুতির অভিযোগে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। পাশাপাশি এই চক্রের সঙ্গে জড়িত অন্য সদস্যদের শনাক্ত ও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।”
তিনি আরও জানান, জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং অপরাধীদের গতিবিধি রোধে মহাসড়ক ও গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় চেকপোস্ট কার্যক্রম নিয়মিত পরিচালনা করা হচ্ছে। ভবিষ্যতেও এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
Leave a comment