মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলের সামরিক অভিযান থেমে নেই। গাজা, পশ্চিম তীর, সিরিয়া ও লেবাননে দেশটির হামলা অব্যাহত থাকায় অস্থিতিশীলতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও ইসরায়েলি সামরিক আগ্রাসন কমেনি। যুক্তরাষ্ট্রের নীরবতায় মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন অঞ্চলে পরিস্থিতি ক্রমেই ভঙ্গুর হয়ে উঠেছে।
গাজায় ১০ অক্টোবরের যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হওয়ার পর ফিলিস্তিনিদের ওপর চাপ কিছুটা কমলেও ইসরায়েলি হামলা চলছেই। নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে সম্প্রতি ড্রোন হামলায় একজন নিহত এবং চারজন আহত হয়েছেন। গাজায় অসুস্থদের সীমান্ত পারাপারে বাধা দেওয়া হচ্ছে, এমনকি তৃতীয় ধাপের ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীকেও চিকিৎসার জন্য বাইরে যেতে দেওয়া হয়নি।
পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বাহিনী ফিলিস্তিনিদের দমন অভিযান জোরদার করেছে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত এক হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ইসরায়েল এই অঞ্চলের দখল আরও পাকাপোক্ত করতে চাইছে। তারা ফিলিস্তিনিদের জলপাই সংগ্রহে বাধা দিচ্ছে এবং গ্রেপ্তার ও হেনস্তা চালাচ্ছে। ইসরায়েলের অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোটরিচ তার সমর্থকদের আহ্বান জানিয়েছেন, পশ্চিম তীরকে ইসরায়েলের সঙ্গে সংযুক্ত করতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে সমর্থন করতে।
সিরিয়াতেও সীমান্ত লঙ্ঘন ও হামলা বেড়েছে। দক্ষিণ সিরিয়ার কুনেইত্রা প্রদেশে ইসরায়েলি বাহিনী প্রবেশ করে সাময়িক চেকপোস্ট স্থাপন করেছে এবং স্থানীয়দের হেনস্থা করেছে। সিরিয়ার সরকারি সংবাদ সংস্থা সানা এই ঘটনা জানায়। জাতিসংঘে সিরিয়ার প্রতিনিধি ইব্রাহিম ওলাবি ইসরায়েলকে সীমান্ত লঙ্ঘন বন্ধ করতে এবং দখলকৃত গোলান মালভূমি থেকে সরে যেতে অনুরোধ করেছেন।
লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলেও ইসরায়েলের বিমান ও ড্রোন হামলা চলছে। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা বাহিনী ইউএনআইএফআইএল জানিয়েছে, তাদের টহল দলের কাছে গ্রেনেড নিক্ষেপের প্রতিক্রিয়ায় একটি ইসরায়েলি ড্রোন গুলি করে নামানো হয়েছে। ইসরায়েলি ট্যাংকও শান্তিরক্ষীদের লক্ষ্য করে গুলি করেছে, তবে হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
মার্কিন প্রশাসন ও তেল আবিব চায় লেবানন হিজবুল্লাহকে পুরোপুরি নিরস্ত্র করুক। যদিও ২০২৪ সালের যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে এমন কোনো শর্ত নেই। সাম্প্রতিক হামলায় বেসামরিক লোক নিহত হয়েছেন এবং পুনর্গঠন কার্যক্রমের যন্ত্রপাতিও ধ্বংস হয়েছে।
এভাবে গাজা, পশ্চিম তীর, সিরিয়া ও লেবাননে ইসরায়েলের চলমান হামলা মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিতিশীলতা ও মানবিক সংকট বাড়াচ্ছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এখনও পূর্ণরূপে এ পরিস্থিতি থামাতে সক্ষম হয়নি, ফলে বেসামরিকদের ওপর হুমকি অব্যাহত রয়েছে।
Leave a comment