ঢাকাসহ বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে ভূমিকম্পের আতঙ্ক বাড়ছে। সোমবার (২ ডিসেম্বর) রাতে ৪ দশমিক ৯ মাত্রার কম্পন অনুভূত হয়। বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, এই ভূমিকম্পের উৎপত্তি স্থল মিয়ানমার। তবে পরপর কয়েক দফা কম্পন ঢাকার নরসিংদী, মাধবদী, বাইপাইল ও বাড্ডা এলাকায়ও অনুভূত হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এই ধরনের ভূমিকম্প শুধু সীমান্তবর্তী দেশগুলোতে সীমাবদ্ধ থাকে না, বরং বাংলাদেশেই এর উৎপত্তি হতে পারে। ২০২৫ সালে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এবং পার্শ্ববর্তী এলাকায় মোট ৭৬টি ভূমিকম্প রেকর্ড হয়েছে। বিশেষভাবে ২১ নভেম্বরের নরসিংদীর ভূমিকম্পকে ইন্ট্রাপ্লেট ইভেন্ট হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক এ কে এম শাকিল নেওয়াজ সতর্ক করে বলেন, “প্রধান শকের মাত্রা রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ৮ বা তার বেশি হতে পারে। এরপর আফটার শকের সম্ভাবনা থাকবে।”
দেশের জিপিএস পরিমাপ অনুযায়ী, প্রতি বছর দেশের ফল্টগুলো কয়েক মিলিমিটার করে সরছে, যা ভবিষ্যতে বড় ভূমিকম্পের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। বিশেষ করে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় রয়েছে—সিলেট, ময়মনসিংহ, সুনামগঞ্জ (দৌকি ফল্ট),ঢাকা ও টাঙ্গাইল (মধুপুর ফল্ট) চট্টগ্রাম ও পার্শ্ববর্তী উপকূলীয় এলাকা (চট্টগ্রাম–মিয়ানমার ফল্ট)
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পর্যবেক্ষণ ও জনসচেতনতা তৈরি না হলে বড় ভূমিকম্পে ব্যাপক মানব ও প্রাকৃতিক ক্ষতি হতে পারে। ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন—ভাড়া বা নির্মিত ভবনে নিরাপদ আশ্রয় নির্ধারণ করতে হবে।উচ্চতা ও খোলা জায়গায় নিরাপদভাবে অবস্থান করা। জরুরি প্রণালী ও সরবরাহ ব্যবস্থা প্রস্তুত রাখা। বিদ্যুৎ, পানি ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিপর্যয়ের জন্য প্রাকৃতিক প্রস্তুতি। চলাচল ও পরিবহন খাতে ক্ষতি রোধে জরুরি পরিকল্পনা প্রণয়নের।
তাদের মতে, বড় ভূমিকম্পের প্রভাব শুধুমাত্র স্থাপত্য বা অবকাঠামোতেই সীমাবদ্ধ থাকবে না বরং পানি সরবরাহ, বিদ্যুৎ ও পরিবহন খাতে ব্যাপক বিপর্যয় দেখা দিতে পারে। বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, দেশের বিভিন্ন এলাকায় স্থল কম্পনের উপর নজর রাখা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, জনসচেতনতা বৃদ্ধি ও জরুরি প্রস্তুতি না থাকলে এই ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময়ে বিপুল ক্ষতি হতে পারে।
Leave a comment