বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী মন্তব্য করে বলেছেন, গণতন্ত্রের মূল ভিত্তি হলো ভিন্নমতকে সহ্য ও সম্মান করা । তার মতে, কথা বলার স্বাধীনতা বজায় থাকলে অনেক সমস্যার সমাধান সম্ভব।
রোববার (১০ আগস্ট) সকালে রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ৩৬৫ দিন’ শীর্ষক সংলাপে তিনি এ বক্তব্য দেন। সংলাপটি আয়োজন করে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। আমীর খসরু বলেন, “স্বৈরাচারের পতনের পর বাংলাদেশের মানুষের মানসিকতায় বড় পরিবর্তন এসেছে। তিনি সংঘাতমুখী রাজনৈতিক সংস্কৃতি থেকে সরে আসার আহ্বান জানান এবং বলেন, “বক্তব্যের মাধ্যমে বিষোদগার বন্ধ করতে হবে। গণতন্ত্র মানে অন্যজনের কথা শুনে সহ্য করা এবং তার মতকে সম্মান দেওয়া।”
তার মতে, যদি মানসিকতা পরিবর্তন না হয় তাহলে রাজনৈতিক সংস্কার সম্ভব নয়। তিনি উল্লেখ করেন, “বিপ্লবোত্তর যেসব দেশ দ্রুত নির্বাচন করেছে তারা ভালো ফল পেয়েছে; যারা দেরি করেছে, সেখানে অন্তঃকোন্দল বেড়েছে।”
বিএনপির এই নেতা মনে করেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান দায়িত্ব হলো গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করা এবং জনগণকে দেশের মালিকানা ফিরিয়ে দেওয়া। তিনি বলেন, “ঐকমত্যের প্রচেষ্টা ইতিবাচক। আলাদা মতাদর্শ থাকলেও সবার এক জায়গায় আসা জরুরি। চাপিয়ে দেওয়া পরিবর্তন কখনো টেকসই হয় না।”
অর্থনৈতিক উন্নয়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এই সরকারের সময় বিনিয়োগ আসেনি, তবে এতে তাদের সরাসরি দোষ নেই। বিনিয়োগে বাংলাদেশ পিছিয়ে আছে। সিরিয়াস ডিরেগুলেশন ও সিরিয়াল লিবারেলিজম ছাড়া অর্থনীতি এগোবে না।”
আমীর খসরু প্রস্তাব করেন, সরকারের অনেক দায়িত্ব বেসরকারি খাতে ছেড়ে দিতে হবে। ট্রেড বডির হাতে গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম তুলে দিলে সরকার হালকা হবে এবং ফিজিক্যাল কন্ট্রাক্ট কমানো গেলে দুর্নীতি হ্রাস পাবে। তিনি সতর্ক করে বলেন, “যত বেশি নিয়ন্ত্রণ থাকবে, তত বেশি দুর্নীতি বাড়বে। অর্থনীতিকে গণতান্ত্রিক করতে সবার অংশগ্রহণ প্রয়োজন।”
তিনি আরও বলেন, ফ্যাসিবাদের বাজেট চালিয়ে নেওয়ার দরকার ছিল না; অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উচিত ছিল একটি অন্তর্বর্তী বাজেট দেওয়া।
তার বক্তব্যে স্পষ্ট হয়, রাজনৈতিক মতভেদ স্বাভাবিক হলেও সেগুলো মোকাবিলা যুক্তি ও সংলাপের মাধ্যমে করতে হবে।
Leave a comment