ফরিদপুরের ভাঙ্গায় সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারানো কুষ্টিয়ার কুমারখালীর তিন ভাইয়ের দাফন শেষ হয়েছে। রোববার (৭ ডিসেম্বর) দুপুরে জানাজা শেষে তাদের কুমারখালীর সদকী ইউনিয়নের দুধরাজপুর-মহম্মদপুর কেন্দ্রীয় কবরস্থানে পাশাপাশি কবর দেওয়া হয়।
নিহত তিনজন হলেন—সুমন মণ্ডল (২৫), তার ছোট ভাই রিমন মণ্ডল (১৪) এবং চাচাতো ভাই আশিক মোল্লা (২২)। তারা তিনজনই ঢাকায় থাকতেন। সুমন ও রিমন পেশায় কাঠমিস্ত্রি, আর আশিক বেসরকারি চাকরির পাশাপাশি ভাড়ায় গাড়ি চালাতেন।
শনিবার (৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় সুমনের বোন শেফালীর শাশুড়ি মারা যান। খবর পেয়ে তিন ভাই ঢাকা থেকে মোটরসাইকেলে করে কুষ্টিয়ার শিলাইদহ গ্রামের উদ্দেশে রওনা দেন।
রাত ৮টার দিকে ফরিদপুর-ভাঙ্গা-বরিশাল মহাসড়কের মাধবপুর কবরস্থান এলাকায় হঠাৎ একটি অজ্ঞাত গাড়ি তিন মোটরসাইকেল আরোহীকে ধাক্কা দেয়। ধাক্কার তীব্রতায় তারা রাস্তায় ছিটকে পড়েন। ঠিক সেই মুহূর্তে আরেকটি যান এসে তাদের চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই তিনজনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। ।
খবর পেয়ে ফরিদপুর হাইওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে এবং কুষ্টিয়ার স্বজনদের খবর দেয়। পরে রোববার দুপুরে লাশগুলো নিজ গ্রামে পৌঁছালে আহাজারিতে ভেঙে পড়ে পুরো এলাকা।
আশিকের মা শিউলি খাতুন অসহায় কণ্ঠে বলেন —“আমি কি জানি, বেটা ওর সঙ্গেই আসতেছে গো… কিছুই বলে গেল না গো!”
আশিকের বাবা শাহিন মোল্লাও শোকে ভেঙে পড়েছেন। তিনি বলেন,
“ওরা যে বাড়ি আসতেছে—জানতাম না। রাত ১টার দিকে পুলিশ ফোন দিয়ে জানায় তিনজনই আর বেঁচে নাই।”
অন্যদিকে সুমন ও রিমনের বাবা করিম মণ্ডল বলেন,“রাস্তা খুব ভাঙা ছিল। হঠাৎ গাড়ির ধাক্কায় তিনজনই পড়ে যায়। তারপর আরেকটি গাড়ি এসে তাদের সব শেষ করে দিল।”
দুধরাজপুর-মহম্মদপুর কেন্দ্রীয় কবরস্থানে লাশগুলো পৌঁছানোর পর একে একে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। প্রথমে সুমন, তারপর রিমন এবং সবশেষে আশিককে দাফন করা হয়।
কুমারখালী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আমিরুল ইসলাম বলেন,“ফরিদপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় কুমারখালীর তিনজন নিহত হয়েছেন। পরিবারের আবেদনেই ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে। দুর্ঘটনার বিষয়টি তদন্তে রয়েছে।”
Leave a comment