ব্রহ্মপুত্র নদে নৌকাডুবে তিনজনের মৃত্যুতে শোকের মাতম চলছে কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় গ্রামের বাড়িতে । তাদের এমন মৃত্যুতে গোটা এলাকায় শোকের ছায়া নেমেছে।
মাদরাসায় যাওয়ার পথে মঙ্গলবার (১ জুলাই) সকালে ব্রহ্মপুত্র নদে নৌকাডুবে নিখোঁজ হন তিনজন । ঘটনার দিন উদ্ধারকর্মীরা অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করেন একজনকে। নিখোঁজের একদিন পর আজ বুধবার (২ জুলাই) সকালে ঘটনাস্থল থেকে দুই কিলোমিটার দূরে ভাসমান অবস্থায় স্থানীয়রা অপর দুই শিশুর মরদেহ উদ্ধার করেন।
নিহতরা হলেন- উপজেলার চরফরাদী ইউনিয়নের চরআলগী গ্রামের মাইন উদ্দিনের মেয়ে শাপলা আক্তার (১৪), হাবিব মিয়ার ছেলে আবির (৭) ও মোমতাজ উদ্দিনের ছেলে জুবায়ের (৮)। নিহতদের সবাই পার্শ্ববর্তী গফরগাঁও উপজেলার বিরই নদীরপাড় দাখিল মাদরাসার শিক্ষার্থী ছিলেন। এর মধ্যে শাপলা আক্তার ও আবির সম্পর্কে ফুফু-ভাতিজা হন।
জানা গেছে, উপজেলার চরআলগী গ্রামের ওই তিন শিক্ষার্থীসহ মোট ৯ জন কোষা নৌকা (ছোট নৌকা) দিয়ে ব্রহ্মপুত্র নদ পার হয়ে মাদরাসায় পরীক্ষা দিতে যাচ্ছিলেন। কিছুদূর যাওয়ার পর ডুবে যায় নৌকাটি। এতে নৌকায় থাকা নয়জনের মধ্যে ছয়জন সাঁতরে পাড়ে উঠলেও ওই তিনজন নদে ডুবে নিখোঁজ হন।
খবর পেয়ে কিশোরগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে অভিযান চালিয়ে শাপলা আক্তারের মরদেহ উদ্ধার করে। দিনভর অভিযান চালিয়েও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি নিখোঁজ অপর দুইজনকে । পরদিন সকালে ঘটনাস্থল থেকে দুই কিলোমিটার দূরে স্থানীয়রা ওই দুইজনের মরদেহ ভেসে থাকতে দেখেন । পরে পরিবারের লোকজন গিয়ে তাদের মরদেহ উদ্ধার করেন।
চরআলগী গ্রামের বাসিন্দা হাবিব মিয়া বলেন, আমাদের গ্রামের চারপাশে ব্রহ্মপুত্র নদ। নৌকা ছাড়া তাই চলাফেরা করা যায় না। গ্রামের ছোট ছোট ছেলে-মেয়েরা ছোট নৌকা দিয়ে নদ পার হয়ে স্কুল-মাদরাসায় যায়। মঙ্গলবারে সকালে মাদরাসায় পরীক্ষা দিতে যাওয়ার সময় নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে। এতে এই গ্রামের পাশপাশি দুটি বাড়ির তিনজন ছেলে-মেয়ে মারা গেছেন। আমরা গ্রামবাসী গভীরভাবে শোকাহত। এর আগেও নৌকাডুবে মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। তবে একসঙ্গে তিনজনের মৃত্যু এবারই প্রথম। এতে পুরো গ্রামজুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
চরফরাদী ইউপি চেয়ারম্যান মো. আবদুল মান্নান বলেন, ঘটনাটি খুবই বেদনাদায়ক। পাকুন্দিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. বিল্লাল হোসেন বলেন, নৌকাডুবে একসঙ্গে তিনজনের মৃত্যুতে গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি । ঘটনার পর থেকে উপজেলা প্রশাসন সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখছে। উপজেলা প্রশাসন পরিবার দুটির পাশে রয়েছে।
Leave a comment