দেশের ব্যাংক খাতে নারী কর্মীর সংখ্যা ক্রমেই কমছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ ‘জেন্ডার ইকুয়ালিটি রিপোর্ট অব ব্যাংকস অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউশনস’ অনুযায়ী, চলতি ২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসে ব্যাংকে নারী কর্মী কমেছে ৪ দশমিক ৯৬ শতাংশ বা ১ হাজার ৮৬৭ জন। ২০২৪ সালের শেষ ছয় মাসের তুলনায় এই পতন স্পষ্ট।
শীর্ষ ব্যাংকাররা বলছেন, দেশের অর্থনৈতিক সংকটের কারণে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া ধীর হয়ে গেছে এবং নতুন নিয়োগের ক্ষেত্রে পুরুষদের প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি, কিছু সমস্যায় জর্জরিত ব্যাংকে অভ্যন্তরীণ অস্থিরতার কারণে নারীরা চাকরি ছেড়েছেন। চলতি বছরের জুনে ব্যাংক খাতের মোট ২ লাখ ১৩ হাজার ২৬৭ জন কর্মীর মধ্যে নারীর সংখ্যা ছিল ৩৫ হাজার ৭৮২।
পূবালী ব্যাংক পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘ব্যাংক খাত এখন গ্রামীণ এলাকায় সম্প্রসারিত হচ্ছে। কিন্তু নারীরা পারিবারিক ও ব্যক্তিগত কারণে ঢাকার বাইরে চাকরি নিতে অনাগ্রহী। মোট নারী কর্মীর প্রায় ৮০ শতাংশই ঢাকায় কর্মরত।’ তিনি বলেন, নারীদের বৃহত্তর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে সামাজিক মানসিকতা ও নারীদের আগ্রহ উভয়ই বদলাতে হবে।
সিটি ব্যাংক পিএলসির অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহিয়া জুনেদ বলেন, বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে নারীর অংশগ্রহণ কমছে। চলতি বছরের প্রথমার্ধে এ অংশগ্রহণ ১৭ দশমিক ৯ শতাংশ থেকে ১৬ দশমিক ৬২ শতাংশে নেমেছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং অ্যান্ড ইনস্যুরেন্স বিভাগের অধ্যাপক হাসিনা শেখ বলেন, সামাজিক প্রত্যাশা ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত উদ্বেগ নারীদের ব্যাংকিং ক্যারিয়ারে প্রভাব ফেলে। পড়ালেখা শেষে নারীরা ব্যাংকিং ক্যারিয়ার শুরু করলেও বিয়ে বা সন্তান জন্মের পর চাকরি ছাড়তে বাধ্য হন।
সিপিডি নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, ব্যাংক খাতে নারীর প্রতিনিধিত্ব বাড়াতে ঊর্ধ্বতন ও বোর্ড পর্যায়ে স্পষ্ট পথ তৈরি করা জরুরি। তিনি ব্যাংকগুলোর প্রতি নারীর অংশগ্রহণ ও পদোন্নতি নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
Leave a comment