সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে আশার কথা শোনালেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন। তিনি জানিয়েছেন, বর্তমানে বেগম জিয়ার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে এবং চিকিৎসকেরা তার সুস্থতা নিয়ে অত্যন্ত আশাবাদী।
বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় এসব তথ্য জানান ডা. জাহিদ। তিনি বলেন, “বেগম জিয়াকে যে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে, তিনি তা গ্রহণ করতে পারছেন। তার শরীর চিকিৎসার প্রতি সাড়া দিচ্ছে। চিকিৎসক দল আশাবাদী যে তিনি সুস্থ হয়ে উঠবেন।”
ডা. জাহিদ হোসেন জানান, বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় বাংলাদেশ, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের অভিজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত একটি বিশেষায়িত মেডিকেল বোর্ড কাজ করছে। প্রতিদিন তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে এবং শারীরিক অবস্থার সর্বশেষ পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে চিকিৎসা পদ্ধতি নির্ধারণ করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, “চিকিৎসকদের পাশাপাশি পরিবারের পক্ষ থেকেও সর্বোচ্চ তদারকি করা হচ্ছে। ডা. জুবাইদা রহমান সার্বক্ষণিকভাবে খোঁজখবর রাখছেন। তার ছোট ভাই ও বোনসহ পরিবারের সদস্যরা নিয়মিত তার শারীরিক অবস্থার খবর নিচ্ছেন।”
তবে বেগম খালেদা জিয়া বর্তমানে সিসিইউতে চিকিৎসাধীন থাকায় পরিবারের সদস্যদের সরাসরি তার পাশে থাকার সুযোগ সীমিত রয়েছে বলে জানান ডা. জাহিদ। তিনি বলেন, “সিসিইউতে থাকার কারণে তার পাশে যাওয়া যাচ্ছে না। চিকিৎসকরাই সার্বক্ষণিক তার দেখভাল করছেন।”
এ সময় তিনি দেশবাসীর কাছে বিএনপি চেয়ারপারসনের জন্য দোয়া কামনা করেন। ডা. জাহিদের ভাষায়, “দেশবাসীর কাছে দোয়া চাই, আল্লাহ যেন তাকে দ্রুত সুস্থ করে তোলেন।”
চিকিৎসা সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ২১ নভেম্বর সশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে অংশ নেন বেগম খালেদা জিয়া। ওই দিন তিনি স্বেচ্ছায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এবং তখন তাকে বেশ হাস্যোজ্জ্বল ও স্বাভাবিক দেখা যায়। তবে পরদিন থেকেই তার শ্বাসকষ্টজনিত জটিলতা বাড়তে শুরু করে।
স্বাস্থ্যের অবনতি হলে ২৩ নভেম্বর তাকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরবর্তী সময়ে চিকিৎসকদের পরীক্ষায় জানা যায়, সংক্রমণ তার হৃদ্যন্ত্র ও ফুসফুসে প্রভাব ফেলেছে। অবস্থার আরও অবনতি ঘটলে তাকে সিসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। এরপর থেকে তিনি নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছেন।
হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, বর্তমানে সর্বোচ্চ সতর্কতা ও বিশেষজ্ঞ তত্ত্বাবধানে বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা চলছে । তার বয়স ও বিদ্যমান শারীরিক জটিলতা বিবেচনায় নিয়ে চিকিৎসা পদ্ধতি নির্ধারণ করা হচ্ছে। চিকিৎসকেরা নিয়মিত তার শ্বাসপ্রশ্বাস, হৃদ্যন্ত্রের কার্যক্রম এবং সংক্রমণের অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করছেন।
রাজনৈতিক অঙ্গনেও বিএনপি চেয়ারপারসনের স্বাস্থ্যের খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে নিয়মিত। দলটির নেতাকর্মীরা বিভিন্ন কর্মসূচিতে তার সুস্থতা কামনা করে দোয়া মাহফিল আয়োজন করছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও তার দ্রুত আরোগ্য কামনা করে অসংখ্য শুভাকাঙ্ক্ষী বার্তা দিচ্ছেন।
Leave a comment