রমজান মাসের প্রায় অর্ধেক পেরিয়ে গেছে। বাজারে ছোলা, আলু ও পেঁয়াজের সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলেও সয়াবিন তেলের দাম এখনো নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি। তবে বোতলজাত সয়াবিনের সরবরাহ কিছুটা বাড়ছে, ফলে দামও কিছুটা কমছে।
শুক্রবার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ, চাক্তাই, পাহাড়তলী, রিয়াজউদ্দিন বাজারসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পাইকারিতে বেচাকেনা কিছুটা কম হলেও খুচরা বাজারে ক্রেতাদের ভিড় রয়েছে। ব্যবসায়ীদের ধারণা, বাকি রোজাতেও নিত্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিক বাড়বে না, তবে তা নির্ভর করবে চাহিদা ও সরবরাহের ওপর।
চাক্তাই শিল্প ও ব্যবসায়ী সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহসান খালেদ বলেন, ‘বাজারে সব পণ্যের সরবরাহ ভালো থাকায় দাম বাড়ার আশঙ্কা কম। রোজার শুরু থেকেই দাম স্থিতিশীল ছিল, শেষ দিকেও তা থাকবে বলে আশা করা যায়।’
রোজার আগে থেকেই ছোলার দাম কম ছিল, কারণ চাহিদার তুলনায় আমদানি বেশি হয়েছে। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি ছোলা ১০৫-১১০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছিল, যা এক পর্যায়ে ১১৫ টাকায় ওঠে। তবে বর্তমানে আবার ১১০ টাকার নিচে নেমে এসেছে।
ডালের বাজারও স্থিতিশীল রয়েছে। আমদানি করা মসুর ডাল ১২৫-১৩০ টাকা, মোটা মসুর ১০০-১০৫ টাকা এবং মটর ডাল ৬০-৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা রোজার শুরু থেকেই একই রয়েছে।
বর্তমানে খাতুনগঞ্জে দেশি পেঁয়াজের দাম ৩০-৪০ টাকা প্রতি কেজি, আর খুচরা বাজারে দেশি ও আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫৫ টাকায়। বাজারে দেশি পেঁয়াজের আধিক্য থাকায় দামও নিয়ন্ত্রিত রয়েছে।
গত চার মাস ধরে বোতলজাত সয়াবিন তেলের সংকট ছিল। এখন কিছুটা সরবরাহ বেড়েছে, তবে এখনো নির্ধারিত ১৭৫ টাকার চেয়ে বেশি দামেই বিক্রি হচ্ছে। চট্টগ্রামের খুচরা বাজারে এক সপ্তাহ আগে বোতলজাত সয়াবিন ২০০ টাকা দরে বিক্রি হলেও এখন তা ১৮৫ টাকার আশপাশে নেমে এসেছে।
সরকারি সংস্থাগুলো মনে করছে, সয়াবিনের সংকট কৃত্রিম, কারণ বিভিন্ন গুদাম ও দোকানে বিপুল মজুত পাওয়া গেছে। সম্প্রতি নগরের খতিবের হাট এলাকার একটি দোকান থেকে ৬,৭০০ লিটার বোতলজাত সয়াবিন উদ্ধার করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
এ বছর রমজানে সবজির দাম বেশির ভাগ সময় স্থিতিশীল রয়েছে। রোজার আগে বেগুন ৩৫ টাকা, ক্ষীরা ৩০-৪০ টাকা, টমেটো ২০-৩০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৪০-৬০ টাকা ও আলু ২০-৩০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। বর্তমানে বেশির ভাগ সবজির দাম ৫০ টাকার নিচে রয়েছে, ফলে ক্রেতারা স্বস্তিতে কেনাকাটা করতে পারছেন।
সবজির দাম সহনীয় থাকলেও মাংসের দাম এখনো আগের মতোই বেশি।
ব্রয়লার মুরগি: ১৭৫-১৮৫ টাকা/কেজি
সোনালি মুরগি: ৩০০ টাকা/কেজি
গরুর মাংস (হাড়সহ): ৭৫০-৮০০ টাকা/কেজি
গরুর মাংস (হাড় ছাড়া): ৯৫০ টাকা/কেজি
খাসির মাংস: ১,০৫০-১,১০০ টাকা/কেজি
বাজার পরিস্থিতি দেখে ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাকি রোজাতেও নিত্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিক বাড়বে না। তবে সরবরাহ কমে গেলে কিংবা অতিরিক্ত চাহিদা দেখা দিলে কিছু পণ্যের দাম বাড়তে পারে। সরকারি সংস্থাগুলো বাজার মনিটরিং চালিয়ে যাচ্ছে, যাতে কোনো অসাধু ব্যবসায়ী কৃত্রিম সংকট তৈরি করতে না পারে।
Leave a comment