আমতলী-পটুয়াখালী মহাসড়কের কেওয়াবুনিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে শনিবার দুপুরে, নবজাতক শিশুর চিকিৎসার জন্য পটুয়াখালী নেয়ার পথে ইকরা লাক্সারী পরিবহন নামের এক বাসের চাপায় নিহত হয়েছেন একই পরিবারের তিনজন। আহত হয়েছেন শিশুসহ তিনজন। নিহতরা হলেন মা মোশাদ্দেকা বেগম (২৪), নানা মৌলভী আজিজুল হক (৬৫) ও দাদী খালেদা বেগম (৫০)
শনিবার দুপুরে কলাপাড়া উপজেলার গোলাখালী ইউনিয়নের বলইবুনিয়া গ্রাম থেকে মাওলানা জাহিদুল ইসলাম তার নবজাতক শিশুকে ডাক্তার দেখাতে ইজিবাইকে করে বাড়ি থেকে পটুয়াখালী যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে আমতলী-পটুয়াখালী মহাসড়কের কেওয়াবুনিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে কুয়াকাটাগামী ইকরা লাক্সারী পরিবহন যাত্রীবাহী ইজিবাইকটিকে চাপা দেয়। মুহুর্তের মধ্যে দুমড়ে মুচড়ে যায় ইজিবাইকটি। ঘটনাস্থলেই নিহত হন শিশুর নানা মৌলভী আজিজুল হক, দাদী খালেদা বেগম এবং আহত হন শিশুটি ও শিশুটির মা মোসাদ্দেকা বেগম, বাবা মাওলানা জাহিদুল ইসলাম, দাদা মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস ও ইজিবাইক চালক ওহাব গাজী (৫২)।
স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালে নেয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মশিউর রহমান শিশুটির মা মোসাদ্দেকাকে মৃত ঘোষণা করেন। অপর আহতদের ওই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থা রয়েছে ইজিবাইক চালক ওহাব গাজী ও মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস ।
আমতলী থানার পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে নিহত আজিজুল হক ও খালেদা বেগমের মরদেহ উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।
হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. রাশেদ মাহমুদ রোকনুজ্জামান তাদের মৃত্যু নিশ্চিত করেছেন। নানা মৌলভী আজিজুল হকের বাড়ি আমতলী উপজেলার পশ্চিম সোনাখালী গ্রামে।
প্রত্যক্ষদর্শী সোহেল হাওলাদার ও মেহেদী হাসান বলেছেন, কুয়াকাটাগামী বেপরোয়া গতির ইকরা লাক্সারী পরিবহনের গাড়ীটি পটুয়াখালীগামী ইজিবাইককে চাপা দিলে দুমড়ে মুচড়ে সড়কের পাশে পড়ে যায় ইজিবাইকটি। এতে ইজিবাইকে থাকা একজন পুরুষ ও একজন নারী ঘটনাস্থলেই নিহত হন।
নিহত মোসাদ্দেকার স্বামী মাওলানা জাহিদুল ইসলাম বলেছেন, নবজাতক শিশুকে নিয়ে পটুয়াখালীতে ডাক্তার দেখাতে যাচ্ছিলাম। আমার সাথে আমার স্ত্রী, শ্বশুর, দাদী, ফুফা ছিল। ইকরা পরিবহন গাড়ীটি আমাদের ইজিবাইককে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই আমার দাদী ও শ্বশুর মারা যান। পরে স্থানীয়রা আমাদের উদ্ধার করে পটুয়াখালী হাসপাতালে নিয়ে আসেন। ওই হাসপাতালে মারা যান আমার স্ত্রী। আহত হয় আমার শিশু কন্যাও। তাকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। আমতলী থানার এসআই মো. জলিলুর রহমান বলেছেন, মরদেহ দু’টি উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লে্েক্স নেয়া হয়েছে।
আমতলী থানার ওসি মো. আরিফুল ইসলাম আরিফ বলেছেন, নিহত দুইজনের মরদেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে আনা হয়েছে। পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শিশুটির মা মারা গেছে বলে খবর পেয়েছি। আটক করা হয়েছে ঘাতক বাসটিকে। তবে চালক ও সহযোগী পালিয়ে গেছে। এই ঘটনায় এলাকা ও পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
Leave a comment