Home আন্তর্জাতিক ফ্রান্সের নতুন প্রধানমন্ত্রী সেবাস্টিয়ান লুকোনু, মাক্রোঁর ঘনিষ্ঠ মিত্রের হাতে নেতৃত্ব
আন্তর্জাতিকরাজনীতি

ফ্রান্সের নতুন প্রধানমন্ত্রী সেবাস্টিয়ান লুকোনু, মাক্রোঁর ঘনিষ্ঠ মিত্রের হাতে নেতৃত্ব

Share
Share

ফ্রান্সে রাজনৈতিক টালমাটাল পরিস্থিতির মধ্যে নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দিলেন প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাক্রোঁ। সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী এবং দীর্ঘদিনের ঘনিষ্ঠ মিত্র সেবাস্টিয়ান লুকোনু (৩৯) মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) দেশটির নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

এলিসি প্রাসাদ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে জানানো হয়, লুকোনুর সামনে প্রথম বড় চ্যালেঞ্জ হবে আসন্ন জাতীয় বাজেট পরিকল্পনা সংসদে অনুমোদন করানো। এই বাজেটকেন্দ্রিক সংকটই তার পূর্বসূরি ফ্রাসোয়া বায়রুর পতনের কারণ হয়েছিল।
রাজনৈতিক অচলাবস্থা থেকে নতুন নেতৃত্ব-
প্রধানমন্ত্রী ফ্রাসোয়া বায়রু সরকারের বাজেট কমানো ও ঋণ নিয়ন্ত্রণে আনার পরিকল্পনা পেশ করেছিলেন। কিন্তু বিরোধীদের প্রবল বিরোধিতা এবং সংসদে সমর্থনের ঘাটতির কারণে বিষয়টি অচলাবস্থায় পড়ে।
পরিস্থিতি ঘোলাটে হয়ে ওঠায় বায়রু আস্থাভোট ডাকেন। কিন্তু পার্লামেন্টে ৩৬৪-১৯৪ ভোটে তিনি পরাজিত হন। বিরোধীরা আগেই জানিয়েছিল যে তারা কোনোভাবেই এই পরিকল্পনায় সমর্থন দেবে না। ফলে পরাজয় ছিল সময়ের ব্যাপার মাত্র।
এর ফলে ক্ষমতায় দুই বছরেরও কম সময় থাকা অবস্থায় প্রেসিডেন্ট মাক্রোঁ বাধ্য হন নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দিতে।
কে এই সেবাস্টিয়ান লুকোনু?
সেবাস্টিয়ান লুকোনু ফরাসি রাজনীতির তরুণ মুখ হিসেবে পরিচিত। মাত্র ৩৯ বছর বয়সেই তিনি প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। রাজনৈতিক জীবনে তিনি সবসময় প্রেসিডেন্ট মাক্রোঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে পরিচিত।
২০১৭ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মাক্রোঁর প্রচারণায় সক্রিয় ভূমিকা রাখেন লুকোনু। এর পর থেকে সরকার পরিচালনায় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পেয়েছেন। রাজনৈতিক মহলে তাকে প্রেসিডেন্টের “বিশ্বস্ত সেনাপতি” হিসেবেই দেখা হয়।
নতুন প্রধানমন্ত্রীর চ্যালেঞ্জ-
লুকোনুর সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো ২০২5 সালের জাতীয় বাজেট সংসদে পাশ করানো। বর্তমানে মাক্রোঁর সরকার সংসদে সংখ্যালঘু অবস্থায় রয়েছে। ফলে বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতা তৈরি করাই হবে লুকোনুর মূল দায়িত্ব। এলিসি প্রাসাদ বলছে, তিনি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ চালিয়ে যাবেন, যাতে আসন্ন বাজেট অনুমোদিত হয় এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা যায়।
ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তা
পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, ফ্রান্সে বারবার নেতৃত্ব পরিবর্তন প্রেসিডেন্ট মাক্রোঁর প্রশাসনের জন্য এক বড় সংকেত। মাত্র দুই বছরের মধ্যে নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ রাজনৈতিক অনিশ্চয়তাকে আরও উসকে দিতে পারে। তবে তরুণ ও মাক্রোঁ-ঘনিষ্ঠ নেতা হিসেবে লুকোনু হয়তো সংসদে বিরোধীদের সঙ্গে সমঝোতার মাধ্যমে নতুন পথ খুঁজে বের করতে পারবেন। তার নেতৃত্ব কতটা কার্যকর হয়, সেটিই এখন ফরাসি রাজনীতির বড় প্রশ্ন।

Share

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Don't Miss

রোদের তাপ উপেক্ষা করে দীর্ঘ লাইনে শিক্ষার্থীরা, জমজমাট ডাকসু নির্বাচন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে চলছে ডাকসু নির্বাচন। প্রচণ্ড রোদের তাপ উপেক্ষা করে ভোট দিতে শিক্ষার্থীরা দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। টিএসসি এলাকা থেকে শুরু হওয়া...

ডাকসু নির্বাচনে ঢাবি ক্যাম্পাসজুড়ে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকালে শুরু হয়েছে ভোটগ্রহণ। সকাল ৮টা থেকে শুরু হওয়া...

Related Articles

ফিলিস্তিনের পক্ষে শিল্পীদের অবস্থান, ইসরায়েলি প্রযোজনা ও উৎসব বর্জনের ঘোষণা

ফিলিস্তিনে চলমান সহিংসতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিবাদে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আরও কঠোর অবস্থান...

ঢাবির ইতিহাসে প্রথমবার ডাকসুতে জয়ী স্বামী-স্ত্রী

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের ইতিহাসে নতুন এক দৃষ্টান্ত সৃষ্টি...

নেপালে জেল ভেঙে পালাচ্ছে বন্দিরা: রবি লামিছানেকে মুক্তি

নেপালের ধনগড়ি জেলে শনিবার রাতে বিক্ষোভকারীদের হামলার পর বন্দিরা জেল ভেঙে পালিয়েছে,...

৩৩ বছর পর জাকসু নির্বাচন: ভোটের জন্য প্রস্তুত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

৩৩ বছর পর আগামীকাল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) নির্বাচন...