ইরান আবারও ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধ শুরুর আশঙ্কা প্রকাশ করেছে। দেশটির প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ রেজা আরেফ সোমবার (১৮ আগস্ট) বলেন, “যেকোনো মুহূর্তে ইসরায়েলের হামলা শুরু হতে পারে, তাই ইরানকে সর্বদা প্রস্তুত থাকতে হবে। বর্তমানে যা চলছে, তা কোনো স্থায়ী যুদ্ধবিরতি নয়, কেবল সাময়িক বিরতি।”
এর আগে গত জুনে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে টানা ১২ দিন ধরে পাল্টাপাল্টি হামলা হয়। ইসরায়েলের বিমান হামলায় ইরানের একাধিক পরমাণু স্থাপনা, সামরিক ঘাঁটি ও আবাসিক এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। নিহত হন বেশ কয়েকজন পরমাণু বিজ্ঞানী, সেনা কর্মকর্তা ও সাধারণ নাগরিকসহ হাজারেরও বেশি মানুষ।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় সেই সংঘাত সাময়িকভাবে বন্ধ হলেও, ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র বারবার হুঁশিয়ারি দিয়ে আসছে। তারা সতর্ক করেছে, তেহরান যদি আবারও পরমাণু সমৃদ্ধ কার্যক্রম চালু করে, তবে নতুন করে ইরানের পরমাণু স্থাপনাগুলোতে হামলা চালানো হবে।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির সামরিক উপদেষ্টা ইয়াহিয়া রহিম সাফাভিও রোববার সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতির জন্যও প্রস্তুতি নিচ্ছি। ইরানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।” তিনি উল্লেখ করেন, ইসরায়েলের যেকোনো অগ্রাসন মোকাবিলায় ইরানের প্রতিরক্ষা বাহিনীকে সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় রাখা হয়েছে।
জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) তথ্যমতে, বর্তমানে পরমাণু অস্ত্র না থাকা দেশগুলোর মধ্যে একমাত্র ইরানই ৬০ শতাংশ পর্যন্ত ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করছে। অথচ ২০১৫ সালের আন্তর্জাতিক চুক্তি অনুযায়ী দেশটি সর্বোচ্চ ৩ দশমিক ৬৭ শতাংশ পর্যন্ত ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করতে পারবে।
পরমাণু অস্ত্র তৈরির জন্য প্রয়োজন ৯০ শতাংশ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম। এ কারণে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে গভীর উদ্বেগ বিরাজ করছে।
মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে সংঘাত শুরু হলে শুধু ইরান-ইসরায়েল নয়, পুরো অঞ্চলের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়তে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিশ্লেষকরা। বিশেষজ্ঞদের মতে, ইরানের পরমাণু কার্যক্রম ও ইসরায়েলের সামরিক পদক্ষেপের কারণে এই ভূরাজনৈতিক সংকট আরও তীব্র হচ্ছে।
Leave a comment