ফিলিপাইনে ঘূর্ণিঝড় কালমায়েগির তাণ্ডবে মৃতের সংখ্যা ১১৪-এ পৌঁছেছে। বুধবার (৫ নভেম্বর) সেবু প্রদেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে নতুন করে মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। সেবু প্রদেশের সরকারি মুখপাত্র রোন রামোস জানিয়েছেন, প্রাদেশিক রাজধানীর মেট্রো এলাকার অংশ লিলোয়ান শহরের বন্যা কবলিত এলাকা থেকে ৩৫টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
নেগ্রোস দ্বীপেও পরিস্থিতি আশঙ্কাজনক। পুলিশ কর্মকর্তা স্টিফেন পোলিনার জানান, টানা বৃষ্টিপাতের ফলে কমপক্ষে ১২ জন নিহত হয়েছেন এবং আরও ১২ জন নিখোঁজ। ক্যানলাওন শহরের অনেক বাড়িঘর মাটিচাপা পড়ে ধ্বংস হয়ে গেছে। তিনি উল্লেখ করেন, গত বছর থেকে আগ্নেয়গিরির উপাদান এলাকায় জমে ছিল, যা এই বৃষ্টির সময়ে গ্রামগুলোতে ছড়িয়ে পড়েছে।
ঘূর্ণিঝড় ও বন্যার সময় ত্রাণ কার্যক্রম চালাতে গিয়ে একটি সামরিক হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে ছয় ক্রু সদস্য প্রাণ হারিয়েছেন। এ ঘটনায় উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম আরও জোরদার করা হয়েছে। ত্রাণকর্মীরা জানিয়েছেন, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে মানুষের জীবন ও সম্পদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এ বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, বন্যার পানি রাতের দিকে এত তীব্র ছিল যে বাইরে আর কিছু দেখা যাচ্ছিল না। ৫৩ বছর বয়সী রেনাল্ডো ভার্গারা বলেন, “এত তীব্র পানি আমি আগে কখনো দেখিনি; পানি প্রচণ্ড উত্তাল ছিল।”
দেশটির আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ চারমাগনে ভারিলা জানিয়েছেন, কালমাগির ভূমিধ্বসের ২৪ ঘণ্টা আগে সেবু সিটি ও আশেপাশের এলাকা ১৮৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের শিকার হয়। এটি মাসিক গড়ের ১৩১ মিলিমিটারেরও বেশি। বিজ্ঞানীরা সতর্ক করেছেন, মানব-সৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এ ধরনের ঘূর্ণিঝড় ও বন্যা আরও তীব্র ও শক্তিশালী হচ্ছে।
ফিলিপাইনে উদ্ধারকর্মীরা এখনও ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন ও বন্যা-প্রভাবিত মানুষদের ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার কাজ চালাচ্ছেন। স্থানীয় প্রশাসন জরুরি আশ্রয় কেন্দ্র চালু করেছে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম ত্বরান্বিত করা হয়েছে।
Leave a comment