প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বৃহস্পতিবারে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে ‘জুলাই সনদ’-এর নীতিমালা লঙ্ঘিত হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।
বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার ভাষণের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা তাঁর ঘোষণায় জুলাই সনদের মূল চেতনা ও ঐকমত্যের বাইরে নতুন ধারণা সংযোজন করেছেন, যা সনদের নীতিমালা ভঙ্গের শামিল।”
সালাহউদ্দিন আহমদ দাবি করেন, প্রধান উপদেষ্টার প্রস্তাবিত ‘সংবিধান সংস্কার পরিষদ’ ধারণাটি জুলাই সনদ বা ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় ছিল না। “এটি একতরফাভাবে সংযোজন করা হয়েছে, যা সনদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এর আগে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সরকার বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো—সংবিধান সংস্কার প্রস্তাবনাগুলোর ওপর গণভোট আয়োজন এবং পরবর্তীতে সংবিধান সংস্কার পরিষদ গঠনের সিদ্ধান্ত।
তিনি জানান, গণভোটে যদি সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট “হ্যাঁ” সূচক হয়, তবে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিয়ে পরিষদ গঠন করা হবে। পরিষদ সদস্যরা একইসাথে সংসদ সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করবেন এবং ১৮০ কার্যদিবসের মধ্যে সংস্কার কার্যক্রম সম্পন্ন করবেন। পরবর্তীতে নির্বাচনের ফলাফলের অনুপাতে একটি উচ্চকক্ষ গঠন করা হবে, যার মেয়াদ নিম্নকক্ষের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ থাকবে।
প্রধান উপদেষ্টা আরও ঘোষণা করেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনই জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোট অনুষ্ঠিত হবে। এই প্রস্তাব বিএনপির পক্ষ থেকেও আগে তোলা হয়েছিল, যদিও জামায়াতসহ আটটি রাজনৈতিক দল এর আগে গণভোটটি নির্বাচনের পূর্বে আয়োজনের দাবি জানিয়েছিল।
বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “আমরা শুরু থেকেই বলেছি, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন হবে ঐকমত্যের ভিত্তিতে। কিন্তু আজকের ঘোষণায় বোঝা যাচ্ছে, উপদেষ্টা পরিষদ এককভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে—এটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার পরিপন্থী।”
তিনি আরও বলেন, “জুলাই সনদ কেবল রাজনৈতিক দলগুলোর সমঝোতার ফল নয়, এটি জাতীয় ঐকমত্যের দলিল। একে পাশ কাটিয়ে নতুন কাঠামো তৈরি করা হলে এই সরকার জনগণের আস্থা হারাবে।”
Leave a comment