উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে হঠাৎ বেড়ে গেছে কাপ্তাই হ্রদের পানি। বাঁধের গেট খুলে পানি নিস্কাশন শুরু করলেও পানির চাপ কমানো যাচ্ছে না। এতে হ্রদের তীরবর্তী গ্রামগুলো পানিতে তলিয়ে গেছে, দুর্ভোগে পড়েছে স্থানীয় বাসিন্দারা।
মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টা থেকে কাপ্তাই কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের ১৬টি গেট দিয়ে সাড়ে তিন ফুট উচ্চতা পর্যন্ত পানি ছাড়া শুরু হয়।
কাপ্তাই কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান বুধবার সকালে জানান, পাহাড়ি ঢলের কারণে হ্রদের পানির উচ্চতা বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। “প্রতি মুহূর্তে পানি অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাধ্য হয়ে সবগুলো গেট খুলে দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও জানান, বুধবার সকাল ৮টায় কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা দাঁড়ায় ১০৮.৯০ ফুট মিন সি লেভেল, যেখানে সর্বোচ্চ ধারণক্ষমতা ১০৯ ফুট মিন সি লেভেল। পানির চাপে সচল করা হয়েছে জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের সব ইউনিট, যেখান থেকে প্রতি সেকেন্ডে জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হচ্ছে ২২২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পানির চাপে ইতোমধ্যেই হ্রদের আশপাশের বহু বাড়িঘর তলিয়ে গেছে। ভোগান্তিতে পড়েছে শত শত পরিবার। হঠাৎ স্রোত বেড়ে যাওয়ায় কাপ্তাই বাঁধের নিচ দিয়ে প্রবাহিত কর্ণফুলী নদীর পানি তীব্র হয়ে উঠেছে।
এর ফলে রাঙামাটি–বান্দরবান সড়কের চন্দ্রঘোনা ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। নৌযান চালক ও যাত্রীরা জানিয়েছেন, অতিরিক্ত স্রোতে ফেরি চালানো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢল অব্যাহত থাকলে হ্রদের পানি আরও বেড়ে যেতে পারে। এতে রাঙামাটি শহর ও নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতা এবং দীর্ঘমেয়াদি ক্ষয়ক্ষতির ঝুঁকি রয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন বাসিন্দাদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে।
Leave a comment