স্ত্রীকে হত্যার পর মরদেহ ১১টি টুকরো করে ঘরের বিভিন্ন স্থানে রাখেন স্বামী। কিছু অংশ বাথরুমের কমোডে ফেলে পানির ফ্লাশ দিয়ে গুমের চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে বাড়ির নিরাপত্তাকর্মীর কাছে ধরা পড়ে যাওয়ায় পালিয়ে যান জানালার গ্রিল ভেঙে ।
শনিবার (১২ জুলাই) সকালে চট্টগ্রাম নগরের বায়েজিদ বোস্তামী থানার রৌফাবাদ এলাকায় স্ত্রীকে নৃশংসভাবে হত্যার পর পালিয়ে যাওয়া স্বামী মোহাম্মদ সুমনকে গ্রেফতারের পর র্যাব আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার ফুলবাড়িয়া এলাকা থেকে শুক্রবার (১১ জুলাই) রাতে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত সুমন কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলার সুয়াগাজী গ্রামের সুন্দর আলীর ছেলে।
র্যাব জানায়, গত ৯ জুলাই রাতে রৌফাবাদ পাহাড়িকা হাউজিং সোসাইটির একটি ভাড়া বাসায় ধারালো ছুরি দিয়ে ফাতেমা বেগমকে (৩২) হত্যা করেন স্বামী সুমন। হত্যার পর ১১টি টুকরো করে মরদেহ ঘরের বিভিন্ন স্থানে রাখেন এবং কিছু অংশ বাথরুমের কমোডে ফেলে পানির ফ্লাশ দিয়ে গুমের চেষ্টা করেন।
ঘটনার দিন রাতে ঘর থেকে দুর্গন্ধ ও অস্বাভাবিক শব্দ পেয়ে সন্দেহ হলে ভবনের নিরাপত্তাকর্মী মশিউর রহমান সুমনের বাসায় যান। ভেতরে ঢুকে রক্তের দাগ ও মরদেহের অংশবিশেষ দেখতে পেয়ে, নিচে গিয়ে অন্যদের ডাকতে গেলে সুমন জানালার গ্রিল ভেঙে পালিয়ে যান। এ ঘটনায় বাদী হয়ে বায়েজিদ বোস্তামী থানায় হত্যা মামলা করেন নিহতের বড় ভাই মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন রুবেল। মামলায় সুমনের বিরুদ্ধে হত্যা ও মরদেহ গুমের চেষ্টার অভিযোগ আনা হয়।
র্যাব-৭ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান বলেন, গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সুমন স্ত্রী হত্যার দায় স্বীকার করেছেন। ১০ বছর আগে পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর সৌদি আরবে পাড়ি জমালেও ভিসা জটিলতায় গত বছর দেশে ফিরে চট্টগ্রামে একটি পিকআপ চালানো শুরু করেন সুমন। দেশে ফেরার পর থেকেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পারিবারিক কলহ বেড়ে যায়। একাধিকবার পারিবারিকভাবে সমঝোতার চেষ্টা হলেও তা স্থায়ী হয়নি।
তিনি আরো বলেন, ঘটনার দিন রাতে ৬–৭ জন অচেনা যুবকের বাসায় আগমন নিয়ে বাগবিতণ্ডা হয় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে । একপর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে ঘরে থাকা দুটি ছুরি দিয়ে স্ত্রীকে আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করেন সুমন এবং মরদেহ গুমের চেষ্টা করেন। পরে আইনি ব্যবস্থা নিতে বায়েজিদ বোস্তামী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে তাকে ।
Leave a comment