পাবনা জেলা সদরের আরিফপুর কেন্দ্রীয় কবরস্থান এলাকায় এক নারীর স্বামীকে কবরস্থানে আটকে রেখে তাঁর স্ত্রী ও ১৩ বছর বয়সী মেয়েকে অপহরণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী স্বামী আজ শনিবার সকালে পাবনা সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগ ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগীর বাড়ি আটঘরিয়া উপজেলায়। তিনি পেশায় বিদেশে লোক পাঠানোর ব্যবসা করেন। সম্প্রতি এক নারীকে বিয়ে করেন তিনি। ওই নারীর আগের সংসারে থাকা কিশোরী মেয়েকেও নিয়ে গতকাল রাতে পাবনা শহরের আরিফপুর এলাকায় একটি ভাড়া বাড়ির নিচতলায় ওঠেন। সেখানে স্ত্রী, মেয়ে ও তরুণ শ্যালককে নিয়ে নতুন জীবন শুরু করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।
কিন্তু রাত গভীর হলে হঠাৎ কয়েকজন অজ্ঞাত ব্যক্তি তাঁদের দরজায় নক করতে শুরু করে। প্রথমে তাঁরা দরজা খুলতে অস্বীকার করলেও দুর্বৃত্তরা কৌশলে ভেতরে ঢুকে পড়ে। এ সময় ঘরের জিনিসপত্র তছনছ করে ফেলে এবং ভুক্তভোগী ব্যক্তিকে জোরপূর্বক বাসা থেকে বের করে পাশের কবরস্থানে নিয়ে আটকে রাখে। দীর্ঘ কয়েক ঘণ্টা পর ভোরে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। বাসায় ফিরে এসে তিনি দেখেন, স্ত্রী ও মেয়ে নেই।
আজ দুপুরে ঘটনাস্থল ঘুরে দেখা যায়, তিন কক্ষবিশিষ্ট ওই ভাড়া বাসার একপাশে ভুক্তভোগীরা উঠেছিলেন। কক্ষটিতে খুব বেশি আসবাবপত্র ছিল না; শুধু একটি খাট, কয়েকটি তোশক–বালিশ ও কিছু খাদ্যসামগ্রী ছিল। প্রায় সবকিছুই এলোমেলো অবস্থায় পড়ে আছে।
প্রতিবেশীদের অনেকে জানান, ভোরের দিকে দুই নারীকে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যেতে দেখেছেন কয়েকজন। তবে কারা এবং কী কারণে তাঁদের নিয়ে গেছে, তা কেউ স্পষ্ট করে বলতে পারেননি। বাড়ির মালিক শেলী আক্তার বলেন, “গতকাল রাত আটটার দিকে তাঁরা বাসা ভাড়া নিয়ে উঠেছেন। রাতে কী হয়েছে, আমরা কিছুই বুঝতে পারিনি। সকালে উঠে শুনি এ ঘটনা।”
এ বিষয়ে পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস সালাম জানান, অভিযোগ পাওয়ার পর পুলিশ, ডিবি ও র্যাব একযোগে নিখোঁজ মা–মেয়েকে উদ্ধারের জন্য কাজ করছে। তিনি বলেন, “ঘটনার তদন্ত চলছে। আশা করছি খুব দ্রুতই তাদের সন্ধান পাওয়া যাবে।”
এ ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, এমন ঘটনা এই এলাকায় আগে ঘটেনি। ভুক্তভোগী পরিবার ও স্বজনেরা দ্রুত মা–মেয়েকে উদ্ধার করে নিরাপদে ফিরিয়ে আনার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
Leave a comment