নোয়াখালীর সদর উপজেলায় সিঁধ কেটে ঘরে ঢুকে এক গৃহবধূকে ধর্ষণের ঘটনায় পলাতক থাকা প্রধান আসামি মো. জসিমকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১১। রবিবার (১২ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা থেকে তাকে আটক করা হয়। সোমবার (১৩ অক্টোবর) দুপুরে আসামিকে নোয়াখালী চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
র্যাবের প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, গ্রেফতারকৃত জসিম (৩৫) নোয়াখালী সদর উপজেলার আন্ডারচর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম মাইজচরা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি স্থানীয় জামাল উদ্দিনের ছেলে। গত ১৭ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে জেলার সদর উপজেলার একটি গ্রামে এই নৃশংস ঘটনা ঘটে। অভিযোগ অনুযায়ী, ভিকটিমের স্বামী পেশায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাচালক। তিনি মাইজদী শহরে কাজ করেন এবং সপ্তাহে একদিন বাড়িতে আসতেন। এসময় গৃহবধূ পালিত কন্যা সন্তানকে নিয়ে একাই বাড়িতে থাকতেন।
সেই সুযোগে রাতের অন্ধকারে সিঁধ কেটে ঘরে প্রবেশ করে জসিম ও তার এক সহযোগী। তারা প্রথমে গৃহবধূর মুখ চেপে ধরে ভয় দেখায় এবং পরে তাকে ধর্ষণ করে। এক পর্যায়ে গৃহবধূ জসিমকে চিনে ফেললে তাকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে গলায় চুল ঢুকিয়ে শ্বাসরোধের চেষ্টা করে বলে মামলার অভিযোগে উল্লেখ আছে।
গুরুতর আহত অবস্থায় ভিকটিম চিৎকার করলে প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসে। ততক্ষণে অভিযুক্তরা পালিয়ে যায়। ঘটনার পরদিনই গৃহবধূ সুধারাম মডেল থানায় ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা করেন। মামলার পর থেকেই আসামি জসিম গা ঢাকা দেয়। বিষয়টি র্যাবের নজরে এলে তারা পলাতক আসামিকে ধরতে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ায়।
র্যাব-১১, সিপিসি-৩ নোয়াখালী ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার ও সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মিঠুন কুমার কুণ্ডু বলেন, “ঘটনার পর আসামি আত্মগোপনে চলে যায়। আমাদের একটি বিশেষ দল গোপন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে রবিবার বিকেলে তাকে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা থেকে গ্রেফতার করে।”
তিনি আরও বলেন,“আসামির বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে দায়ের করা মামলার তদন্ত অব্যাহত আছে। সোমবার দুপুরে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।” ঘটনার পর এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। তারা দ্রুত আসামিদের গ্রেফতার ও কঠোর শাস্তির দাবি জানায়।
নোয়াখালীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে নারী নির্যাতনের ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন নারী অধিকারকর্মীরা। তারা বলছেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দ্রুত পদক্ষেপ প্রশংসনীয় হলেও নারী নিরাপত্তায় সামাজিক সচেতনতা ও প্রতিরোধ গড়ে তোলাও জরুরি।
Leave a comment