নোয়াখালীর সোনাপুরে গভীর রাতে দুর্বৃত্তদের আগুনে নোবিপ্রবি শিক্ষার্থী পরিবহনের দুটি বিআরটিসি বাস সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে । বুধবার (৩ ডিসেম্বর) রাত আড়াইটার দিকে সোনাপুর বিআরটিসি ডিপোতে এ অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।
মুহূর্তেই আগুন ছড়িয়ে পড়ায় বাস দুটির বডি, ফোম ও অভ্যন্তরীণ কাঠামো পুরোপুরি ভস্মীভূত হয়। আরেকটি বাস আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত প্রায় ২টা ৩০ মিনিটে হঠাৎ ডিপোর ভেতর থেকে আগুনের শিখা উঠতে দেখে তারা দ্রুত ফায়ার সার্ভিসে খবর দেন। কল পাওয়ার পর মাত্র ১০–১৫ মিনিটের মধ্যে মাইজদী ফায়ার স্টেশনের দুইটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে কাজ শুরু করে। কিন্তু বাসের বডিতে ব্যবহৃত ফোমের কারণে আগুন মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে এবং ‘গুলবাহার’ ও ‘মালতি’ নামের নোবিপ্রবি পরিবহনে ব্যবহৃত বাস দুটি পুরোপুরি পুড়ে যায়।
একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন,“আগুন এত দ্রুত ছড়াচ্ছিল যে কিছুই বাঁচানোর উপায় ছিল না। কয়েক মিনিটের মধ্যেই দুইটি বাস আগুনে ঢেকে যায়।”
সোনাপুর বিআরটিসি ডিপোর ম্যানেজার মো. আরিফুর রহমান তুষার বলেন, ‘খবর পেয়েই দ্রুত ঘটনাস্থলে আসি। ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশও সঙ্গে সঙ্গে এসে কাজ শুরু করে। পুরো ঘটনাটিই স্পষ্ট নাশকতা। আজই আমার বদলি হওয়ার কথা ছিল—সব প্রস্তুতিও শেষ। কিন্তু যাকে এখানে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তিনি আসতে অনাগ্রহী। আমার ধারণা, বদলি ঠেকাতেই পরিকল্পিতভাবে এ অপকর্ম করা হয়েছে। ঘটনাটি অত্যন্ত প্রফেশনালভাবে ঘটানো হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন,“এখানে আমার সহকর্মীরা খুবই সহযোগিতাপূর্ণ। আজ আমাকে বিদায় সংবর্ধনা দেওয়ার প্রস্তুতিও ছিল। এলাকাবাসীও সবসময় পাশে থেকেছে। রাজনৈতিক অস্থিরতার সময়েও এমন কিছু ঘটেনি। তাই এটি কোনো সাধারণ মানুষের কাজ নয়—এটি পরিকল্পিত নাশকতা।”
নোয়াখালী ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক মো. ফরিদ আহমেদ বলেন,“রাত ২টা ৪০ মিনিটে খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে ১০ মিনিটের মধ্যেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। দুটি বাস সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে এবং একটি বাস আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তদন্ত ছাড়া আগুনের উৎস নিয়ে মন্তব্য করা যাচ্ছে না।”
এ ঘটনার পর নোবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের একাংশ শিক্ষার্থী নিয়মিতভাবে বিআরটিসির এসব বাসে যাতায়াত করেন। বাস পুড়ে যাওয়ায় তাদের দৈনন্দিন যাতায়াতে নতুন সংকট তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকে।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাস্থল থেকে প্রাথমিক কিছু আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। কারা কী উদ্দেশ্যে এ অগ্নিসংযোগ করেছে—তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
Leave a comment