আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সারাদেশে ৯০ হাজার সেনাসদস্য মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সেনাবাহিনীর পাশাপাশি নৌ ও বিমানবাহিনীর সদস্যরাও দায়িত্ব পালন করবেন বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
শনিবার (১ নভেম্বর) রাতে রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে তিন বাহিনীর প্রধানরা নির্বাচনের প্রস্তুতি ও পরিকল্পনা সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস-কে অবহিত করেন। র্যাব ও পুলিশের পাশাপাশি সেনা সদস্যরা এবার মাঠ পর্যায়ে আরও বিস্তৃতভাবে দায়িত্ব পালন করবেন। বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, প্রতিটি উপজেলায় একটি করে সেনা কোম্পানি মোতায়েন থাকবে, যারা স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ ও বিজিবির সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করবে।
এছাড়া আড়াই হাজারের বেশি নৌবাহিনীর সদস্য এবং অল্পসংখ্যক বিমানবাহিনীর সদস্য বিশেষ দায়িত্বে মোতায়েন থাকবেন — বিশেষ করে উপকূলীয় ও দুর্গম এলাকায়। বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস বলেন,“ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর করতে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
তিনি তিন বাহিনীর প্রধানদের উদ্দেশে বলেন, নির্বাচনকালীন সময়ে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যেন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়। প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, গত ১৫ মাসে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে “ কঠোর পরিশ্রম” করেছেন। এজন্য তিন বাহিনীর সদস্যদের প্রশংসা জানান তিনি।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ নাজমুল হাসান, বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান। তিন বাহিনীর প্রধানরা নির্বাচনের সময় নিরাপত্তা ব্যবস্থার কাঠামো, টহল পরিকল্পনা এবং সমন্বিত কমান্ড সেন্টার গঠনের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেন।
বৈঠকের শেষে তিন বাহিনীর প্রধান আসন্ন ২১ নভেম্বর সশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টাকে উপস্থিত থাকার জন্য আমন্ত্রণ জানান। আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। নির্বাচন কমিশন এখন প্রস্তুতির চূড়ান্ত পর্যায়ে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সেনা মোতায়েনের এই সিদ্ধান্ত মাঠপর্যায়ের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা নিশ্চিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। অতীতে বাংলাদেশে নির্বাচনের সময় সেনাবাহিনীর উপস্থিতি জনগণের আস্থা বৃদ্ধিতে কার্যকর ভূমিকা রেখেছে বলে উল্লেখ করেন পর্যবেক্ষকরা।
Leave a comment