
নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন ও এর প্রতিবেদন বাতিলের দাবিতে এবং ভারতে মুসলিমদের ওপর নির্যাতনের প্রতিবাদে ঢাকায় বিক্ষোভ ও সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস। আজ শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে রাজধানীর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে এই কর্মসূচি পালন করে দলটির ঢাকা মহানগর শাখা।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন খেলাফত মজলিস ঢাকা মহানগরের সভাপতি মাওলানা আজিজুল হক। তিনি বলেন, “এই নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন ইসলামবিদ্বেষী। তাদের প্রস্তাব সামাজিক শৃঙ্খলা বিনষ্ট করবে। কমিশন অবিলম্বে বাতিল করতে হবে এবং প্রতিবেদন প্রত্যাহার করতে হবে। অন্যথায় দেশব্যাপী তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।”
ভারতে মুসলিমদের ওপর নির্যাতন নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে আজিজুল হক বলেন, “ভারতে মুসলিম নির্যাতন বন্ধ না হলে নরেন্দ্র মোদির মসনদ খানখান হয়ে যাবে।”
সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন দলটির মহাসচিব মাওলানা আহমদ আবদুল কাদির। তিনি বলেন, “এই কমিশন ইসলাম ও জাতির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। তারা যৌনকর্মীদের স্বীকৃতি দিতে চায়—এটা সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে।” তিনি আলেমদের সমন্বয়ে একটি নতুন কমিশন গঠনের দাবি জানান।
নায়েবে আমির আহমেদ আলী কাসেমী বলেন, “আমরা নারীবিষয়ক কমিশনের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করছি। ভারতের বিতর্কিত ওয়াকফ বিল বাতিল চাই, ফিলিস্তিনে গণহত্যা বন্ধ চাই।” তিনি কমিশনের নারীদের জন্য ৩০০ আসন সংরক্ষণের প্রস্তাবকেও অযৌক্তিক ও বাস্তববিরোধী বলে আখ্যায়িত করেন।
সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন খেলাফত মজলিসের ঢাকা মহানগরীর সভাপতি মাওলানা সাইফুদ্দিন আহমেদ খন্দকার। তিনি বলেন, “এই কমিশনের প্রস্তাবনার মাধ্যমে নারীদের সম্মানহানি ঘটানো হয়েছে। ইসলামী মূল্যবোধে আঘাত করা হয়েছে। দেশের স্বার্থেই এটি বাতিল করতে হবে।”
সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেট থেকে শুরু হয়ে পল্টন মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। মিছিল থেকে স্লোগানে নারীবিষয়ক কমিশনের প্রতিবেদন প্রত্যাহার, ভারতে মুসলিম নির্যাতন বন্ধ, ফিলিস্তিনে গণহত্যা বন্ধ এবং ইসলামী আদর্শ রক্ষার দাবি জানানো হয়।
অন্যদিকে, একই স্থানে জাতীয় বিপ্লবী পরিষদ (এনআরসি) নামে একটি সংগঠন কাশ্মীর, ফিলিস্তিন এবং আরাকানের স্বাধীনতার দাবিতে পৃথক সমাবেশ করে। এছাড়া ‘মৌলিক বাংলা দল’-এর ব্যানারে কয়েকজন ব্যক্তি ভারতীয় মুসলিমদের ওপর নির্যাতনের প্রতিবাদ জানান।
রাজনৈতিক ও ধর্মীয় এ কর্মসূচিগুলোর ফলে শুক্রবার বায়তুল মোকাররম এলাকা জুড়ে ছিল উত্তেজনা, সতর্ক অবস্থানে ছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও।
Leave a comment