নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলায় বজ্রপাতে ওয়াসিম (১৩) নামে এক স্কুলছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। রোববার (৫ অক্টোবর) বিকেলে উপজেলার কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়নের উলুকান্দি গ্রামে এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।নিহত ওয়াসিম উলুকান্দি গ্রামের দিলা মিয়ার ছেলে এবং স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, বিকেলে ওয়াসিম গোয়ালঘর থেকে গরুকে ঘাস খাওয়ানোর পর বাড়ির উঠানে বের হওয়ার সময় হঠাৎ বজ্রপাত হয়। বজ্রাঘাতে ঘটনাস্থলেই সে গুরুতর আহত হয়।
পরে স্থানীয়রা দ্রুত তাকে উদ্ধার করে সোনারগাঁ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ওয়াসিমের চাচা মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, “বিকেলের দিকে হালকা বৃষ্টি হচ্ছিল। ওয়াসিম গরুকে ঘাস খাইয়ে বাইরে বের হয়েছিল। হঠাৎ বজ্রপাত হলে সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। আমরা দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাই, কিন্তু সে আর বাঁচেনি।”
সোনারগাঁ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. ফজলুল হক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, “ওয়াসিমকে হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। বজ্রাঘাতে শরীরের একাধিক স্থানে গুরুতর দগদগে চিহ্ন পাওয়া গেছে।” স্থানীয় শিক্ষক আব্দুল কাদের বলেন, “ওয়াসিম খুবই ভালো ছাত্র ছিল। তার মৃত্যু আমাদের সবার জন্য অপূরণীয় ক্ষতি।”
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, অক্টোবর মাসে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বজ্রপাতের প্রবণতা বেড়ে যায়। বিশেষ করে বিকেল ও সন্ধ্যায় বজ্রপাতের আশঙ্কা বেশি থাকে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বজ্রপাতের সময় যেসব কাজ করা ঝুঁকিপূর্ণ—
• খোলা মাঠে হাঁটাচলা,
• গাছ বা বৈদ্যুতিক খুঁটির নিচে আশ্রয় নেওয়া,
• মোবাইল ফোন ব্যবহার করা,
• ধাতব বস্তু স্পর্শ করা—
এসব থেকে বিরত থাকলে দুর্ঘটনার ঝুঁকি অনেকটাই কমানো সম্ভব।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৪ সালে দেশে বজ্রপাতে অন্তত ২৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য অংশই ছিল কৃষক, শ্রমিক এবং শিক্ষার্থী।
সংস্থাটি বলছে, বজ্রপাত এখন ‘জাতীয় দুর্যোগ’ হিসেবে স্বীকৃত। সরকার বিভিন্ন জেলায় বজ্রপাত প্রতিরোধে গাছ রোপণ, নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্র স্থাপন এবং জনগণকে সচেতন করার উদ্যোগ নিয়েছে।
Leave a comment