বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তুমব্রু সীমান্তে মর্মান্তিক এক দুর্ঘটনা ঘটেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে সীমান্তবর্তী এলাকায় মাটির নিচে পুঁতে রাখা একটি স্থলমাইন বিস্ফোরণে মো. ইউনুছ (২৭) নামের এক রোহিঙ্গা যুবকের ডান পা উড়ে যায়। ইউনুছ কক্সবাজার জেলার উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরের ২-পূর্ব ক্যাম্পের ১-বি ব্লকের বাসিন্দা।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্র জানায়, রাত আনুমানিক সাড়ে নয়টার দিকে পশ্চিম তুমব্রু গ্রামের বাসিন্দারা একটি বিকট বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পান। পরে তারা সীমান্তবর্তী শূন্যরেখার দিকে ছুটে গিয়ে কাঁটাতারের বেড়ার পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা যুবককে দেখতে পান। তাঁর ডান পা গোড়ালি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল এবং শরীরের বিভিন্ন অংশে রক্তপাত হচ্ছিল। স্থানীয়রা দ্রুত তাঁকে উদ্ধার করে শরণার্থী শিবিরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়।
নাইক্ষ্যংছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসরুরুল হক জানান, মাইনটি বিস্ফোরিত হয় বাংলাদেশের সীমান্ত থেকে প্রায় ২০০ মিটার ভেতরে, মিয়ানমারের ভূখণ্ডে। ওই অঞ্চল বর্তমানে মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী ‘আরাকান আর্মি’র (এএ) নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, চোরাচালানের উদ্দেশ্যে ইউনুছ ওই এলাকায় প্রবেশ করেছিলেন এবং তখনই বিস্ফোরণের শিকার হন।
সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে সম্প্রতি মাইন বিস্ফোরণের ঘটনা আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। শুধু গত পাঁচ দিনেই নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে তিনটি মাইন বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে, যাতে এক কিশোরসহ তিনজনের পা বিচ্ছিন্ন হয়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ও সদর ইউনিয়নের সীমান্তে নয়জন কিশোর ও তরুণ মাইন বিস্ফোরণে পা হারিয়েছেন।
এই দুঃখজনক ও ভয়াবহ ঘটনাগুলো সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কার্যকর হস্তক্ষেপ ও সমন্বয়ের প্রয়োজনীয়তার কথা মনে করিয়ে দেয়।
Leave a comment