ঈদের আগে তারল্য সংকটে থাকা ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক ও সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংককে নতুন করে আড়াই হাজার কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংক নতুন টাকা ছাপিয়ে এই ঋণ দেবে বলে জানা গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর এ অনুমোদন দেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী মুখপাত্র মোহাম্মদ শাহরিয়ার সিদ্দিকী জানিয়েছেন, দুই ব্যাংক তারল্য সংকটের কারণে বেশ কিছুদিন আগে আবেদন করেছিল। বৃহস্পতিবার সেই আবেদন অনুমোদন করা হয়। ফলে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক ১,৫০০ কোটি টাকা ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক ১,০০০ কোটি টাকা ঋণ পাবে। তবে কতদিন এভাবে টাকা ছাপিয়ে সহায়তা দেওয়া হবে, তা নিশ্চিত করেননি তিনি।
বর্তমান গভর্নরের আমলে এ পর্যন্ত ২৯,৪১০ কোটি টাকা বিভিন্ন ব্যাংককে এভাবে ঋণ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে এসআইবিএলকে ৫,৫০০ কোটি টাকা, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংককে ৬,৫০০ কোটি টাকা, ন্যাশনাল ব্যাংককে ৫,০০০ কোটি টাকা, এক্সিম ব্যাংককে ৮,৫০০ কোটি টাকা সহ আরও কয়েকটি ব্যাংককে সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
২০২২ সালের শেষ দিকে এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর বিরুদ্ধে ঋণসংক্রান্ত জালিয়াতির অভিযোগ ওঠে। এরপর আমানতকারীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং ব্যাপক হারে টাকা উত্তোলন শুরু হয়। তখন থেকেই বাংলাদেশ ব্যাংক টাকা ছাপিয়ে এসব ব্যাংককে সহায়তা দিচ্ছে। তবে সরকার পরিবর্তনের পর ব্যাংকগুলোর পরিচালনা পর্ষদে পরিবর্তন আনা হয় এবং ঋণ প্রদান সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছিল।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তা জানান, আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে নগদ অর্থের চাহিদা বেড়ে গেছে, ফলে নতুন করে এই ঋণ দেওয়া হচ্ছে। তবে তিনি নিশ্চিত করেছেন, এই অর্থ শুধুমাত্র আমানতকারীদের পাওনা পরিশোধে ব্যবহার করা যাবে, অন্য কোনো খাতে নয়।
ব্যাংক খাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে বিশেষজ্ঞ মহল সতর্ক দৃষ্টি রাখছে। তাদের মতে, এভাবে বারবার নতুন টাকা ছাপিয়ে ব্যাংক খাতকে বাঁচানোর প্রচেষ্টা দীর্ঘমেয়াদে অর্থনীতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
Leave a comment