জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ সোমবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলায় অনুষ্ঠিত ইফতার মাহফিলে সেনাবাহিনীকে দেশের জনগণের পাশে থাকার আহ্বান জানান।
জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের সদস্য, আহত যোদ্ধা সব শ্রেণি-পেশার মানুষের সম্মানে আয়োজিত ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান। কসবা মহিলা কলেজ মাঠে এ ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
হাসনাত আব্দুল্লাহ মাহফিলে বলেন, “দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার্থে ৫ আগস্ট ছাত্র ও নাগরিকদের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে আওয়ামীবিরোধী অবস্থান নিয়েছে। এখন আমাদের সেনাবাহিনী দেশের জনগণের পাশে থেকে এই সংগ্রামকে এগিয়ে নিতে সাহায্য করবে।” তিনি সকল রাজনৈতিক দলের উদ্দেশ্যে আহ্বান জানিয়ে মন্তব্য করেন, “আপনার রাজনীতির আদর্শ যেটাই হোক না কেন আপনি যদি ফ্যাসিবাদবিরোধী দলের অংশ হন, তবে পরবর্তী বাংলাদেশে আপনার অবস্থান থাকবে। যারা ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করতে চাইবে, তাদের আমরা শত্রু মনে করব।”
মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন এনসিপির দলীয় নেতাকর্মীসহ বিএনপি, জামায়াত ইসলাম, হেফাজত ইসলামসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী। কসবা উপজেলার নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক মো. মনিরুল হকের সভাপতিত্বে ইফতার মাহফিলে এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের যুগ্ম মুখ্য সংগঠক মো. আতাউল্লাহ, ডা. আশরাফুল ইসলাম সুমন ও সংগঠক জিহান মাহমুদ বিশেষ অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করেন।
হাসনাত আব্দুল্লাহ অতীতের রাজনৈতিক অব্যবস্থাপনা এবং নির্বাচন প্রক্রিয়ার অসদাচরণ নিয়ে তীব্র সমালোচনা করে বলেন, “গত দেড় দশকে জুলুম ও ডামি ইলেকশন হয়েছে। কবর থেকে এসেও ভোট দিয়ে গেছে। অত্যন্ত দুঃখজনক বিষয় সে সময় কোনো সচিব, কোনো ডিসিকে পদত্যাগ করতে দেখিনি। আওয়ামী লীগের কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘১০টি ফেরাউনকেও যদি একত্রে করা হয়, তা-ও হাসিনার মতো এত দুর্ধর্ষ, এত জুলুমকারী হতে পারবে না। আইয়ামে জাহিলিয়াতের সময় যেভাবে বিশৃঙ্খল পরিবেশ ছিল, গুম-খুন, হত্যা-নিপীড়ন আর নির্যাতন করত; ঠিক একইভাবে আওয়ামী লীগের আমলেও সব অপকর্মগুলো বিদ্যমান ছিল।’
মন্তব্যে তিনি জানিয়েছেন, “রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের প্রতি নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নেই। তবে আওয়ামী লীগ যে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো নষ্ট করেছে, তা দেশের মানুষের হাতে ফেরত আনার চেষ্টা করা হবে। আমাদের উচিত সব রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান থেকে জনগণকে বিচ্ছিন্ন করা থেকে বিরত থাকা।”
অতীতে আওয়ামী লীগের চালানো গণহত্যার বিচার কাজের অগ্রগতি নিয়ে হাসনাত প্রধান উপদেষ্টাদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি সতর্ক করে বলেন, “যদি দ্রুত আওয়ামী লীগের বিচার না হয়, তবে ধরে নেওয়া হবে যে তাদের দোসররা এখনো সক্রিয় আছে। দেশের সংস্কারের রোডম্যাপ সকলের সামনে স্পষ্ট করা অত্যন্ত জরুরি।”
Leave a comment