বিশ্বব্যাপী থাইরয়েড সংক্রান্ত নানা সমস্যা ও এর প্রতিকার নিয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ২৫ মে পালিত হলো বিশ্ব থাইরয়েড দিবস। ২০০৮ সাল থেকে প্রতি বছর এই দিনটিকে বিশ্ব থাইরয়েড দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়। আন্তর্জাতিক থাইরয়েড ফেডারেশন এবং ইউরোপিয়ান থাইরয়েড অ্যাসোসিয়েশনের যৌথ উদ্যোগে এই দিবসের সূচনা হলেও বর্তমানে বিশ্বের প্রায় সব দেশেই দিনটি গুরুত্বের সঙ্গে পালিত হচ্ছে।
থাইরয়েড গ্রন্থি হলো শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ যা হরমোন উৎপাদনের মাধ্যমে বিপাকীয় প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে। কিন্তু হাইপোথাইরয়েডিজম, হাইপারথাইরয়েডিজম, গলগন্ড, থাইরয়েড ক্যান্সারসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন লক্ষ লক্ষ মানুষ। বিশেষজ্ঞদের মতে, সঠিক সচেতনতা ও দ্রুত চিকিৎসা গ্রহণের মাধ্যমেই এসব রোগ থেকে মুক্ত থাকা সম্ভব।
দিনটি উপলক্ষে বাংলাদেশসহ নানা দেশে স্বাস্থ্য সংস্থা, হাসপাতাল, থাইরয়েড ফাউন্ডেশন এবং চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানগুলো বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচির আয়োজন করে। এর মধ্যে রয়েছে সচেতনতামূলক সেমিনার, বিনামূল্যে থাইরয়েড পরীক্ষা, চিকিৎসক পরামর্শ, পোস্টার বিতরণ এবং গণমাধ্যমে প্রচার কার্যক্রম।
ঢাকায় বাংলাদেশ এন্ডোক্রাইন সোসাইটির উদ্যোগে আয়োজিত এক গোলটেবিল আলোচনায় বিশেষজ্ঞরা বলেন, “নারীদের মধ্যে হরমোনজনিত রোগ বেশি হলেও পুরুষরাও ঝুঁকিমুক্ত নয়। প্রতি বছর বিশ্বের প্রায় ২০ কোটি মানুষ কোনো না কোনোভাবে থাইরয়েড সমস্যায় ভোগেন, অথচ এর একটি বড় অংশ চিকিৎসার বাইরে থেকে যায়।”
তারা জানান, গর্ভবতী নারী, নবজাতক ও শিশুদের জন্য থাইরয়েড সমস্যার প্রভাব আরও মারাত্মক হতে পারে। তাই থাইরয়েড পরীক্ষা ও সঠিক চিকিৎসা গ্রহণ করা জরুরি।
বিশ্ব থাইরয়েড দিবসে এবারের প্রতিপাদ্য ছিল “থাইরয়েড সচেতনতা বাড়ুক, স্বাস্থ্য হোক নিরাপদ।” দিনটির মাধ্যমে জনসাধারণের মধ্যে এই বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে যে, শরীরের সামান্য উপসর্গও অবহেলা না করে যথাসময়ে থাইরয়েড পরীক্ষা করানোই হতে পারে সুস্থতার প্রথম ধাপ।
স্বাস্থ্যসচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সুরক্ষিত রাখতে বিশ্ব থাইরয়েড দিবস এক গুরুত্বপূর্ণ উপলক্ষ হয়ে উঠছে বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা।
Leave a comment