ঢাকাই চলচ্চিত্রের জীবন্ত কিংবদন্তি নায়ক আলমগীরের চলচ্চিত্রে আগমন যেন সিনেমার গল্পের চেয়েও রোমাঞ্চকর। সেই গল্পই জানালেন তাঁর কণ্যা, সংগীতশিল্পী আঁখি আলমগীর। বাবার অভিনয়জীবনের সূচনার অজানা অধ্যায় তিনি শেয়ার করেছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে, পুরোনো পারিবারিক বাড়ির একটি ছবি পোস্ট করে।
আঁখির পোস্টের সূত্র ধরে জানা যায়, ঢাকার তেজগাঁও স্টেশন রোডের বাড়িটিই ছিল তাঁদের পারিবারিক আবাসস্থল, যেখানে কাটিয়েছেন শৈশব, যেখানেই শুরু হয়েছিল নায়ক আলমগীর হয়ে ওঠার যাত্রা। বাড়িটি নির্মিত হয়েছিল ১৯৫৫ সালে। আঁখি জানান, এই বাড়ির এক অংশ ভাড়া নিতে এসেছিলেন চলচ্চিত্র পরিচালক আলমগীর কুমকুম। সেখানেই তাঁর চোখে পড়ে বাড়ির এক সুদর্শন তরুণ—আলমগীর। তখনই জন্ম নেয় চলচ্চিত্র ইতিহাসের এক নতুন অধ্যায়। ভবিষ্যতের নায়ক আলমগীরকে সেদিন নিজের সিনেমার জন্য পছন্দ করেন পরিচালক।
আঁখির ভাষায়, “এই বাড়ির একটা অংশ ভাড়া নিতে এসেছিলেন শ্রদ্ধেয় পরিচালক আলমগীর কুমকুম। তাঁর ভালো লাগে এই বাড়ির এক সুদর্শন তরুণকে। এভাবেই আবিষ্কৃত হন বাংলাদেশের কিংবদন্তি অভিনেতা আলমগীর।” কুমকুম কাকা পরে তাঁর নামও রাখেন ‘আঁখি’।
আলমগীরের প্রথম চলচ্চিত্র ছিল মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ‘আমার জন্মভূমি’, যা ১৯৭৩ সালে মুক্তি পায়। এরপর দীর্ঘ ক্যারিয়ারে পেয়েছেন ৯ বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, পরিচালনা করেছেন সিনেমাও, অর্জন করেছেন আজীবন সম্মাননা।
তেজগাঁওয়ের সেই বাড়ি এখন আর নেই। তার জায়গায় গড়ে উঠেছে অ্যাপার্টমেন্ট ভবন। কিন্তু সেই পুরোনো বাড়ির স্মৃতির বাতাস যেন এখনো আঁখির শরীর ছুঁয়ে যায়। তিনি লিখেছেন, “আধুনিক যান্ত্রিক জীবনের পরতে পরতে আমি বারবার অতীতকে ফিরে পাই, খুঁজতে হয় না, অতীত আমাকে খুঁজে নেয়।”
নায়ক আলমগীরের আবিষ্কারের সেই অভূতপূর্ব কাহিনি যেন প্রমাণ করে, চলচ্চিত্র শুধু রূপালি পর্দায় নয়, জন্ম নেয় জীবনের অন্দরের গল্প থেকে।
Leave a comment